সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় এক গৃহবধুকে নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার গভীর রাতে সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম নারায়নপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। রবিবার সকালে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করেছে।

নিহত গৃহবধুর নাম রুবিনা আক্তার (২৬)। তিনি কালীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব নারায়নপুর গ্রামের মোঃ আহসানউল্লার স্ত্রী।

কালীগঞ্জ উপজেলার পানিয়া গ্রামের নূর ইসলাম গাজীর ছেলে জিএম ফয়সাল আহম্মেদ জানান, তার বোন রুবিনা আক্তারের সঙ্গে একই উপজেলার পশ্চিম নারায়নপুর গ্রামের মোকছেদুল ইসলামের ছেলে আহসানউল্লার ২০১১ সালে বিয়ে হয়। আহসানউল্লাহ পেশায় ইনসেপ্টা কোম্পানীর বিক্রয় প্রতিনিধি। বিয়ের পর থেকে তারা পেশাগত কারণে খুলনার ফুলতলায় অবস্থান করতো। এ সময় আহসানউল্লাহ তার স্ত্রীকে বাপের বাড়ি থেকে যৌতুকের টাকা আনার জন্য বিভিন্ন সময় পীড়াপীড়ি করতো। আহসানউল্লার সঙ্গে ফুলতলার এক মহিলার পরকীয়ার জের ধরে স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই বিরোধ হতো।

নির্যাতন করায় রুবিনা বাদি হয়ে ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল স্বামী ও শ্বাশুড়ির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করে। মামলা করার পর থেকে রুবিয়া ও ছোট বোন ডালিযা সাতক্ষীরা নার্সিং ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষন শুরু করে। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা উপপরিদর্শক সোহরাব হোসেন দুর্বল অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করায় মামলাটি ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে খারিজ হয়ে যায়। এরপর থেকে আহসানউল্লাহ ও তার মা হাবিবা বিভিন্ন কৌশলে রুবিয়াকে বুঝিয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের লক্ষ্যে তিন মাস আগে খুলনার ফুলতলায় নিয়ে আসে।

তিনি আরো জানান, পহেলা বৈশাখে রুবিনা ও আনসানউল্লাহ নারায়নপুরে আসে। পূর্ব বিরোধের জের ধরে শনিবার গভীর রাতে আহসানউল্লাহ ও তার মা হাবিবা বসতঘরের মধ্যে নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করে রুবিনাকে। পরে লাশের গলায় দড়ি বেঁধে রান্না ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে পরিবারের সদস্যরা পালিয়ে যায়।

কালীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক মোঃ শহীদুল্লাহ জানান, রুবিনা আক্তারের গলায়, বুকে, পিঠে ও যৌনাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বসত ঘরে হত্যার পর লাশ রান্না ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। লাশের পাশে রাখা একটি মাছ ধরার নেট উদ্ধার করা হয়েছে। নির্যাতনের পর এ নেট দিয়ে রবিনাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে মর্মে ধারণা করা হচ্ছে। হত্যার পর মা হাবিবা খাতুনকে নিয়ে পালিয়ে গেছে আহসানউল্লাহ। রোববার সকাল ৯টার দিকে লাশ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।



(আরকে/অ/এপ্রিল ২০, ২০১৪)