স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি বলেছেন, ইসলামের নামে যারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে কথা বলে তারা রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়ে ধর্মেও আশ্রয় নিয়েছে। 

তিনি বলেন, আজকে যারা ইসলামের নামে ভাস্কর্য নিয়ে কথা বলে; ১৯৭১ সালে তারাই বলেছিল, বাংলাদেশ স্বাধীন হলে এই দেশটা ভারত হয়ে যাবে। এই সকল ধর্মীয় ফতোয়াবাজরা রাজনৈতিকভাবে পরাজিত শক্তি। তারাই এই ধর্মের আশ্রয় নিয়েছিল; তারা আবার নতুন করে এই পথ বেছে নিতে চায়। এই পথ বেছে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই, কারণ বাংলাদেশ আজ স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেছে। ষড়যন্ত্রকারীদের আমরা চিনে ফেলেছি আমরা তাদের বিচার করেছি। অনেকেই ফাঁসির দন্ডে দন্ডিত হয়েছে। অনেকে আবার সাজাপ্রাপ্ত অবস্থায় পলাতক রয়েছে। যারা ধর্মকে নিয়ে ব্যবসা করছেন তাদের প্রতি হুঁশিয়ার উচ্চারণ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেই পথে হাটতে গেলে কী হবে ভবিষ্যতে আপনারা বুঝতে পারবেন।

প্রতিমন্ত্রী সোমবার বিকেলে দিনাজপুর শিল্পকলা একাডেমীর অডিটরিয়ামে দিনাজপুর মুক্ত দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু অমর, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা যায়নি। জিয়া-এরশাদ-খালেদা জিয়ারা পারেনি। বঙ্গবন্ধু একটি আদর্শ, বঙ্গবন্ধু একটি দেশের নাম। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অপর নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

তিনি বলেন, ইতিহাস পাল্টানো যাবে না, ইতিহাস পাল্টানোর কোন সুযোগ নেই। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পরে জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ারা অনেকভাবে চেষ্টা করেছে ইতিহাসকে পাল্টে দেওয়ার জন্যে, ইতিহাসকে অন্য ধারায় পাল্টে দেওয়ার জন্য অনেক চেষ্টা করেছে কিন্তু পারে নাই। অনেক মানুষের শরীর থেকে রক্ত ঝরেছে, অনেকেই শহীদ হয়েছে, অনেককে গুম করা হয়েছে। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে পারে নাই। বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলা যাবে না, কারণ বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশকে আলাদা করা যাবে না। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একসূত্রে গাঁথা। বাংলাদেশ মানেই বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ১৪ ডিসেম্বর দিনাজপুর মুক্ত হয়েছে। আমাদের বাংলাদেশ স্বাধীন ও মুক্ত হয়েছে ১৬ ডিসেম্বর। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস এখানেই গেটলক। এরপর আর কোন ইতিহাস নেই। ১৬ ডিসেম্বরের পর যারা ইতিহাস রচনা করতে চায় তারা ইতিহাস বিকৃত করতে চায়, ইতিহাসকে ভিন্ন ধারায় নিতে চায়। এরা ধর্ম ব্যবসায়িদের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করতে চায়।

১৪ ডিসেম্বর দিনাজপুর মুক্ত দিবস উদযাপন পরিষদের সভাপতি আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য মনোরঞ্জন শীল গোপাল, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য এ্যাড. জাকিয়া তাবাসসুম জুঁই, জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইমাম চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসলাম উদ্দীন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারুকুজ্জামান চৌধুরী মাইকেলসহ অন্যরা।

অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন,বিশিষ্ট সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব তনুজা শারমিন তনু।

আলোচনা সভার শুরুতে জাতীয় সংগীতের তালে তালে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস শহীদদের স্মরণে ১ মিনিট নিরবতা পালন হয় ও দিনাজপুর হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে দিনাজপুরের মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষাৎকার দিয়ে পশ্চিম রণাঙ্গন নামে সাংবাদিক তনুজা শারমিন তনু’র সঞ্চালনায় একটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

(এস/এসপি/ডিসেম্বর ১৫, ২০২০)