স্টাফ রিপোর্টার, ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁয়ে বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষ বাড়ছে। এখানকার মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অনেকেই কমলা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। কমলা চাষ করে আশাতীত সাফল্য পাওয়ায় এখন অনেকে বাণিজ্যিকভাবে এগিয়ে আসছেন কমলা চাষে।

পতিত-অনাবাদি জমিতে কমলা চাষ করে অনেকে পেয়েছেন আশাতীত সাফল্য। এই কমলা চাষ করে ঘুরছে অনেকের ভাগ্যের চাকা। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে সু-স্বাদু মিষ্টি কমলা।বাতাসে কমলা’র টক-মিষ্টির গন্ধ।

বৃহত্তর দিনাজপুরের ঠাকুরগাঁয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার বীরহলি গ্রামের কৃষক আবু জাহিদ জুয়েলের দার্জিলিং জাতের উৎপাদিত এসব কমলা স্বাদে মিষ্টি এবং আকারেও বড়।

কমলা চাষী আবু জাহিদ জুয়েল জানিয়েছেন, তার কমলা ওজনে ৪/৫টি এক কেজি। এছাড়াও রয়েছে, তার অষ্টোলিয়ান এবং চাইনিজ জাতের কমলাও। বীরহলি এবং মালঞ্চ গ্রামে প্রায় ৬ একর জমিতে জুয়েল কমলা চাষ করছেন।

আবু জাহিদ জুয়েলের কমলা চাষ ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। তার আশাতীত সাফল্য দেখে অনেকেই এখন কমলা চাষে নেমেছেন।পতিত-অনাবাদি জমি, বাসা-বাড়ি’র আঙ্গিনার পাশাপাশি ফসলী জমিতেও চাষ হচ্ছে কমলা।

এলাকার কমলা চাষী মোস্তফা কামাল জানান, লাভজনক হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষ শুরু করেছে অনেকেই।অধিকাংশ গাছেই ফল ধরেছে। আবার অনেক গাছ রয়েছে নিবিড় পরিচর্যায়। গাছগুলি বেশ পরিপূর্ণতা লাভ করেছে। দূর-দূরান্ত থেকে কমলা বাগান ও গাছ দেখছে ছুঁটে আসছে অনেকেই। এসব কমলা গাছ ও বাগান অনেককে অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে কমলা চাষে।কমলা চাষে অনেক শ্রমিকের হয়েছে কর্মসংস্থানও।

ঠাকুরগাঁয়ের পীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মো. এস,এম.গোলাম সারওয়ার জানান, হিমালয়ের পাদদেশে ঠাকুরগাঁও এর অবস্থান হওয়ায় ভৌগলিক কারণে এ জেলায় পুষ্টিকর বিদেশী ফল কমলা চাষের উজ্জ্বল সম্ভবনা রয়েছে। উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা গেলে বাণিজ্যিকভাবে মালটা চাষে কৃষক সফলতা পাবে। এই কমলা চাষে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছে হর্টিকালচার সেন্টার ও কৃষি বিভাগ।

দিনাজপুর হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ জানান, ব্যাপকভাবে কমলা উৎপাদন করা গেলে আমদানি নির্ভরতা কমবে। পাশাপাশি কমলা রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং দেশে উৎপাদিত কমলা দিয়ে পুষ্টির চাহিদা মেটানো হবে সম্ভব।

সরজমিনে দেখা গেছে, ঠাকুরগাঁয়ের বিভিন্ন অঞ্চলে বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষ বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এই কমলা চাষ করে ঘুরছে অনেকের ভাগ্যের চাকা। সংশ্লিষ্ট বিভাগের সহযোগিতা অব্যাহত থাকলে এবং এই কমলার ন্যায্য দাম পেলে আগামীতে এ অঞ্চলে কমলাা চাষের পরিধি আরো বেড়ে যাবে এমনটাই মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টারা।

(এস/এসপি/ডিসেম্বর ১৬, ২০২০)