রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : আদালতের নির্দেশ অমান্য করে সাতক্ষীরা সদরের আখড়াখোলা বাজারের সাধুখাঁ পরিবারের জমিতে জোরপূর্বক পাকা ঘর নির্মাণের কাজ চালানো হচ্ছে। শুক্রবার  এ নির্মাণ কাজ চালানোর পর পুলিশ এসে ওই নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার আখড়াখোলা বাজারের বাড়ি সাধন সাধু, কার্তিক সাধু, সন্তোষ সাধু ও নিমাই সাধু জানান, পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৩০ শতক জমির ওপর তাদের শরিকদের বসবাস ও দোকানপাট। এগারো আনি গ্রামের মো. আলাউদ্দিন সরদার ১৯৮৪ সালে শিশু সুমন সাধুকে অপহরন করে ১০ শতক জমি জোর করে লিখে নেওয়ার পর ভারতে চলে যেতে বাধ্য করে বাবা দুলাল সাধুকে। এরপর ১৯৮৫ সালে দুলাল সাধুর সাক্ষর জাল করে আরো ২০ শতক জমির দলিল তৈরি করে তা দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে।

পরে বাটোয়ারা মামলা করলে আলাউদ্দিন হেরে যায়। পরবর্র্তীতে আলাউদ্দিন ১০ শতক জমির পরিবর্তে ১৩ শতক জমি অবৈধভাবে রেকর্ড করে সেখানে দোকান তৈরির লক্ষ্যে আলাউদ্দিন সরদার পার্শ্ববর্তী শরিক তুলশি সাধুর ঘরের টালির চালের একাংশ জোর করে কেটে ফেলেন। এ ঘটনা নিয়ে পুলিশের উপস্থিতিতে গত বছরের ১৭ ফেব্র“য়ারি স্থানীয় ভাবে সালিশদাররা মীমাংসা করার লক্ষ্যে শালিসনামা করে তাদের ন্যায্য পাওনা জমি ও ঘর ফিরিয়ে দেন। এতে সংক্ষুব্ধ হয়ে আলাউদ্দিন ঝাউডাংগা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি রমজান আলি, সাংবাদিক ইয়ারব হোসেনসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

সন্তোষ সাধু আরও জানান, আলাউদ্দিন সরদার তাদের পরিবারগুলিকে হেনস্থা করার লক্ষ্যে গত বছরের ৭ জানুয়ারি ৮ জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে আরও একটি মিথ্যা মামলা করেন। জামিন পেয়েও আলাউদ্দিন ও তার সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের হুমকিতে তারা বাড়ি ঘরে উঠতে না পারায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদিক সস্মেলন করেন। ওই জমি আবারো দখল করার চেষ্টা করলে সন্তোষ সাধু বাদি হয়ে গত বছরের ১৭ জুলাই অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা করেন আলাউদ্দিনসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে। আদালত তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সদর সহকারি কমিশনারকে (ভূমি) নির্দেশ দেন। একই সাথে বিরোধপূর্ণ জমিতে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। পুলিশ এ নিয়ে উভয়পক্ষকে নোটিশ করে।

গত বছরের ৫ ডিসেম্বর সহকারি ভূমি কমিশনার সন্তোষ সাধুর পক্ষে তিন শতক দখল সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেন। এরপরও আলাউদ্দিন ওই জমিতে দু’ সপ্তাহ আগে জোরপূর্বক পাকা ঘর নির্মাণের চেষ্টা চালায়। বাধা দেওয়ায় আপাতত নির্মাণ কাজ বন্ধ করলেও শুক্রবার তারা আবারো নির্মাণ কাজ শুরু করে। বিষয়টি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করলে সহকারি উপপরিদর্শক সুভাস এসে কাজ বন্ধ করে দেয়।

তবে আলাউদ্দিন জানান, তার জমিতেই তিনি ঘর নির্মাণ করছেন।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, বিষয়টি নিয়ে উভযপক্ষকে নিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাধানের চেষ্টা চলছে।

(আরকে/এসপি/ডিসেম্বর ১৮, ২০২০)