প্রহলাদ মন্ডল সৈকত, রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) : শীত ও কনকনে ঠান্ডায় স্থবির হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রামের জনজীবন। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে। ফাঁকা হয়ে পড়ছে বাজার ও রাস্তা-ঘাট। বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবি মানুষ।

রবিবার রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিস জানায়, গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা ১০ থেকে ১২ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ওঠানামা করলেও ২০ডিসেম্বর রবিবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ডিগ্রী সেলসিয়াস। মাঝারি শৈত্য প্রবাহের কারনে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থা আরো কয়েকদিন পর্যন্ত চলতে পারে বলে কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষন কেন্দ্র পর্যবেক্ষক সুবল চন্দ্র সরকার জানান।

এদিক গরম কাপড়ের অভাবে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন। তীব্র শীত কষ্টে ভুগছেন হতদরিদ্র পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধরা। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন অনেকেই।

দিনের বেলা সুর্যের দেখা মেলায় তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও সন্ধ্যার পর থেকে রাত যতই গভীর হয় তাপমাত্রা ততই কমে যাচ্ছে। শীতের পরিমান কিছুটা কম থাকলেও রাতে কনকনে ঠান্ডায় ঘর থেকে বের হওয়াই মুশকিল হয়ে পড়েছে।
এ অবস্থায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে জেলার সাড়ে ৪ শতাধিক চরাঞ্চলের দিনমজুর পরিবারের মানুষজন। গরম কাপড়ের অভাবে তীব্র শীত কষ্টে ভুগছেন তারা।

উলিপুর উপজেলার বেগমগন্জ ইউনিয়নের বালাডোবার চরের আমির হোসেন জানান, এতো বেশি ঠান্ডা পড়েছে যে কাজে যেতে পারছি না। গরম কাপড়ও নাই। বউ বাচ্চা নিয়ে খুবই কষ্টে রাত পার করছি।

উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিএম আবুল হোসেন জানান, ঠান্ডা বেড়ে যাওয়ায় এবং প্রয়োজনীয় গরম কাপড়ের অভাবে আমার ইউনিয়নের হতদরিদ্র পরিবারের মানুষের খুবই কষ্টে দিন যাপন করছে। সরকারী ভাবে যে ৬শ ৪০ পিচ কম্বল বরাদ্দ পেয়েছি তা বিতরণ করা হয়েছে। আমার ইউনিয়নের বেশিরভাগ চরাঞ্চল হওয়ায় হতদরিদ্র মানুষের সংখ্যা বেশি। আমি বিত্তবানদের দৃষ্টি আকর্ষন করছি যেন তারা এসব অসহায় মানুষের প্রতি সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়।

সরকারী ও বেসরকারীভাবে শীত বস্ত্র বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোঃ রেজাউল করিম জানান, সরকারীভাবে জেলার হতদরিদ্র মানুষের মাঝে ৩৫ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও জেলার ৯ উপজেলায় গরম কাপড় কিনে বিতরণের জন্য ৬ লাখ করে টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

(পিএস/এসপি/ডিসেম্বর ২০, ২০২০)