মানিক সরকার মানিক, রংপুর : সকল প্রচার প্রচারণা প্রস্তুতি শেষ। রোববার রাত পোহালেই সোমবার রংপুরের বদরগঞ্জ পৌরসভার ৫মতম নির্বাচন। বর্তমানে প্রার্থীরা অংক কষছেন ভোটের। আর শেষ মুহূর্তে ভোটাররাও ভাবছেন নতুন পৌর পিতা হিসাবে কাকে বেছে নেয়া যায়। এদিকে আজকের এই নির্বাচনকে ঘিরে গোটা পৌর এলাকাজুড়ে বইছে সাজ সাজ রব। 

অন্যদিকে নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ এবং নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হয় সেজন্য যাবতীয় প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে ৪ বারের নির্বাচিত মেয়র এবং ১ বারের প্রশাসক আওয়ামী লীগ নেতা উত্তম কুমার সাহা একটানা ২২ বছর পৌর পিতার দায়িত্ব পালন করে আসলেও এবার নির্বাচন থেকে বিরত আছেন তিনি। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন আগামীতে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন।

এবারের এই নির্বাচনে মেয়র পদে মোট আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন এবং একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিলেও জাতীয় পার্টির কোন প্রার্থী নির্বাচন করছেন না। আর সাধারণ কাউন্সিলর পদে পদে মোট ২৬ এবং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৩ জন। নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক মন্ত্রীপুত্র এবং সদ্য পদত্যাগী ইউপি চেয়ারম্যান আহসানুল হক চৌধুরী টুটুল, ধানের শীষ নিয়ে বিএনপির স্থানীয় নেতা ফিরোজ শাহ, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের সাদ্দাম হোসেন হাতপাখা এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আজিজুল হক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে। এবারই প্রথম বদরগঞ্জ পৌরবাসী ইলেকট্রোনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দিতে যাচ্ছেন। আর এজন্য তাদের মাঝেও একটা নতুন উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

জেলার জ্যেষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা দেয়োয়ার হোসেন জানান, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরণের প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা। তিনি জানান, পৌর এলাকার ৯টি কেন্দ্রের ৬৫টি বুথে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হবে। ইতোমধ্যেই পোলিং অফিসার ও এজেন্ট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় দুই প্লাটুন বিজিবি ছাড়াও র‌্যাব পুলিশের পাশাপাশি ম্যাজিষ্ট্রেট মাঠ থাকবে।

এদিকে এলাকার সাধারণ ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ৪ বারের নির্বাচিত মেয়র এবং ১ বারের প্রশাসক জনপ্রিয় আওয়ামী লীগ নেতা উত্তম কুমার সাহা একটানা ২২ বছর পৌর পিতার দায়িত্ব পালন করে এবার নির্বাচন থেকে বিরত থেকে অপর আওয়ামী লীগ নেতা আহসানুল হক চৌধুরী টুটুলকে সমর্থন জানিছেন। আর এ কারণে টুটুলের পক্ষে ভোটের জেয়ারটা খানিকটা বেশি বলেই মনে করছেন তারা। আবার পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আজিজুল হকেরও রয়েছে জনপ্রিয়তা। কারণ এর আগের নির্বাচনে সামান্য ভোটের ব্যবধানে উত্তমের কাছে হেরে যান তিনি। সার্র্বিক অবস্থায় ভোটারদের মতে, আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মাঝেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে।

আবার স্থানীয় সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও টুটুলের ভাই আবুল কালাম মো: আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক জানান, বদরগঞ্জ পৌরসভার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরাজিত হয়নি। মানুষের চোখে এখানকার উন্নয়ন দৃশ্যমান। তাই ভোটাররা এখন নৌকার বিকল্প কিছু ভাবছেন না। আবার বিএনপি প্রার্থী ফিরোজ শাহ বলছেন, ২২ বছর আওয়ামী লীগের শাসনামলে অতীষ্ঠ পৌরবাসী। এবার ভোটাররা পরিবর্তন চায়। তাই এবার ভোটাররা তাকেই বেছেন নেবেন তারা।

(এম/এসপি/ডিসেম্বর ২৭, ২০২০)