স্টাফ রিপোর্টার : রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার আলহাজ্ব আমেনা খাতুন বিদ্যাপীঠে ২৫/৭/২০১১  সালে সহকারী শিক্ষক (কম্পিউটার) পদে যোগদান করেন মোহাম্মদ সোলায়মান হোসাইন (৩৫)। তিনি  দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক  ২০১১ সালের ১লা মার্চ বিদ্যালয়ের  সভাপতি বরাবর আবেদন করায় তাকে এই নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগের পর ০১/০১/২০১২ তারিখে তিনি এমপিওভূক্ত হোন। এরপর ২০১২ থেকে ২০১৭ সালের  ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত  তিনি সরকারী অংশের বেতন ও ভাতা বাবদ মোট ৯ লক্ষ ৪৯ হাজার ৯ শত টাকা উত্তোলন করেন।

এরই মাঝে দূর্নীতি দমন কমিশন দূদক ওই শিক্ষক সহ আমেনা খাতুন বিদ্যাপীঠের আরো ২ শিক্ষকের বিরুদ্ধে জাল সনদে চাকুরী একটি অভিযোগ পায়। দুদক বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। তদন্ত শেষে দুদক জানতে পারে মোহাম্মদ সোলায়মান হোসাইন এর ৬মাস মেয়াদী ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি পাশের সনদপত্র জাল। শিক্ষক মোহাম্মদ সোলায়মান হোসাইন রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের মৃত আব্দুর রহমান মোল্লার ছেলে।

৩১-১০ ২০১৭ ইং সালে তদন্ত শেষ হলে দুর্নীতি দমন কমিশন ফরিদপুর জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক আহামদ ফরহাদ হোসেন বাদী হয়ে শিক্ষক মোহাম্মদ সোলায়মান হোসাইন এর নামে কালুখালী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। কালুখালী থানার মামলা নং-১৪, ধারাঃ ৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ পেনাল কোর্ড।

থানার মামলটির দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২৭-১২-১৮ ইং তারিখে কালুখালী থানা কোর্টে অভিযোগপত্র দাখিল করে। অভিযোগ নং ১৬০। এতে মোহাম্মদ সোলায়মান হোসাইন ৬মাস মেয়াদী ডিপ্লোমা ইন কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি পাশের সনদপত্র জাল এর কথা স্পষ্ট উল্লেখ্য আছে। মামলাটি চলমান অবস্থায় রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার গোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য দৈনিক সংবাদ নামক পত্রিকায় গত অক্টোবর মাসে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।

ওই পদে আবেদন করেন মোহাম্মদ সোলায়মান হোসাইন। নিয়ম মোতাবেক তাকে পূর্বে কর্মরত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এনওসি (নো অবজেকশন সার্টিফিকেট)সহ আবেদন করেছে। তাতে জাল সনদের ও চলমান মামলার কথা উল্লেখ্য থাকার পরও গোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফরিদ আহমেদ আবেদনকারী মোহাম্মদ সোলায়মান হোসাইন এর আবেদনটি বাতিল করেননি।তিনি এনওসি গোপন রেখে তারাহুড়া করে নিয়োগ সম্পন্ন করছেন।

নিয়মানুসারে কোন মামলার সত্যতা প্রমানের পরই তার চার্জ দাখিল হয়। এদিকে চার্জসীট প্রদানের পরও ওই শিক্ষকের নিয়োগ সিদ্ধান্ত নেওয়া নিয়োগ কমিটির প্রতিও জনমনে সংশয় সৃষ্টি হয়েছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ২০১১ সালে আলহাজ¦ আমেনা খাতুন বিদ্যাপীঠে মোহাম্মদ সোলায়মান হোসাইন নিয়োগের সময় কালুখালী সহকারী শিক্ষা অফিসার জয়ন্ত কুমার দাস ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের দায়িত্ব পালন করছিলেন। নিয়ম মোতাবেক তিনি ওই নিয়োগ কমিটির সদস্য ছিলেন। এবার গোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগের সময়ও কালুখালী সহকারী শিক্ষা অফিসার জয়ন্ত কুমার দাস ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের দায়িত্ব পালন করছেন। উভয় নিয়োগ কমিটির এই সদস্য পুরো ব্যাপারটি সম্পর্কে অবগত । তারপরও কিভাবে হচ্ছে এই নিয়োগ। দেখার কি কেউ নেই ?

(একে/এসপি/ডিসেম্বর ৩০, ২০২০)