ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : রাস্তাঘাট, ড্রেন-কালভার্ট, রোডল্যাম্প, বাস-ট্রাক টার্মিনাল, পৌরপার্ক প্রথম শ্রেণীর নাগরিক সুবিধা বলতে কিছুই নেই আছে আকাশ ছোঁয়া ভ্যাট-ট্যাক্স আর লাগামহীন অনিয়ম। ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌরসভা নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈয়বুর রহমান খান সাংবাদিকদের নিকট এ অভিযোগ করেন।

১৯৯২ সালে পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২৮ বছরেও সত্যিকার রোল মডেলের পৌরসভা পাইনি। প্রথম শ্রেণীর কাগুজে পৌরসভা গঠন করে গড়ে উঠেছে ময়লার ভাগারখ্যাত অপরিকল্পিত নগরী। অপরিচ্ছন্ন নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত এ পৌরসভায় জেঁকে বসেছে নানা অনিয়ম দূর্নীতি আর শোষণ নিপিড়ন। অফিস স্টাফদের বেতন হয়না দেড় বছরের বেশি সময়, মানবেতর জীবন যাপন করে পৌরসভায় চাকুরীজীবিদের পরিবার।

উল্লেখযোগ্য কোন পরিবর্তন নেই, অবকাঠামোগত উন্নয়ন নেই, হাটবাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সর্বত্রই একই কথা, অজানা আতঙ্ক আর রাজনৈতিক যাঁতাকলের ভয়ে বর্তমান মেয়রের বিরুদ্ধে কেউ টু শব্দ করেনা। বছরের পর বছর নানা অনিয়মে চলা পৌরসভাটি এখন পৌরবাসীর মরার উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাড়িয়েছে।

কোর্টপাড়া এলাকার গোলাম রহমান জানান, বিগত মেয়রের আমলে নির্ধারিত ২১ টাকার বাড়ির ট্যাক্স এ বছর ২৬শ টাকা হয়েছে। অনেক তদবীর করে অবশেষে ২ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন। আবাসিক এলাকায় ঘুরলে প্রতি বাড়ি বাড়ি এমন অসংখ্য গোলাম রহমানের দেখা মিলবে বলে সাধারণদের সাথে কথা জানা গেছে।

স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈয়বুর রহমান খান বলেন, তার ছোট্ট দ্বিতল বাড়ির ট্যাক্স দিতে হয়েছে ৪৮ হাজার টাকা। তিনি অভিযোগ করেন শহরের মানুষের নিকট আতঙ্কের আরেক নাম পৌরকর। এছাড়াও রিক্সা-ভ্যানের লাইসেন্স, জন্মসনদসহ যে কোন কাগজের জন্য পৌরসভায় গেলেই সে ব্যক্তির ভিতর শুকিয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। একটি পরিচ্ছন্ন পরিকল্পিত আধুনিক জীবনমান সম্পন্ন শহর পেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে এবার পৌরবাসী সে বিবেচনায় আগামী ১৬ জানুয়ারী ত্রি-মুখী ভোটযুদ্ধের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। আওয়ামীলীগের দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈয়বুর রহমান জগ প্রতীক নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।

নৌকা প্রতীক নিয়ে দলীয় প্রার্থী বর্তমান মেয়র কাজী আশরাফুল আজম, ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে সাবেক মেয়র খলিলুর রহমান ও লাঙ্গল প্রতীকের আবু জাফর প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন। নানা দিক বিবেচনায় সুষ্ঠ পরিবেশে অদৃশ্য ক্ষমতার প্রভাব মুক্ত নির্বাচন হলে পাল্টে যাবে গোটা চিত্র এ নিয়ে কোন সংশয় সাধারণ ভোটারদের মাঝে। স্বতন্ত্র প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর জন্য নানা কৌশলে এগিয়ে যাচ্ছে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী বিষয়টি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠেছে। সময় গড়ানোর সাথে সাথে ধীরে ধীরে পাল্টে যাচ্ছে ভোটের হিসেব। সে বিবেচনায় বিএনপির প্রার্থী জয়ী হওয়ার সম্ভাবনাকে ছোট দেখছেননা রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা।

এ ব্যাপারে পৌর মেয়র কাজী আশরাফুল আজম সরকারি বরাদ্দ কম পাওয়ায় তেমন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড সম্ভব হয়নি বলে অকপটে স্বীকার করেন। তাছাড়া পৌরকর বৃদ্ধির বিষয়টি তিনি নানাভাবে এড়িয়ে যান। তবে প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র প্রার্থী দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ায় এখন দিকভ্রান্ত কর্মকান্ডে লিপ্ত আছেন বলেও মন্তব্য করেন।

(একে/এসপি/ডিসেম্বর ৩১, ২০২০)