শেরপুর প্রতিনিধি : উজান থেমে নেমে আসা পানিদে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে পানিবৃদ্ধি অব্যহাত রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদে পানিবৃদ্ধির সাথে সাথে শেরপুর সদর উপজেলার চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের কুলুরচর এলাকায় নদী ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ভয়াবহ ভাঙ্গনের মুখে পড়ে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে গ্রামবাসী। গত দুইদিনে গ্রামটির প্রায় ৪৮টি ঘরবাড়ী নদের গর্ভে বিলীন হয়েছে।

২১ আগস্ট বৃহস্পতিবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদ বেয়ে উজান থেকে ধেয়ে আসা বন্যার পানি আছড়ে পড়ছে কুলুরচর গ্রামে। কুলুরচর গ্রামের ষাটোর্ধ আব্দুল জলিল, সালেহীন বেপারী, মঙ্গর আলী, মিন্টু, আব্দুর রহিম, আব্দুল করিম বেপারী ও বিল্লাল বেপারীসহ অর্ধশতাধিক মানুষ তাদের ঘরবাড়ী অন্যত্র সরিয়ে নিতে ব্যাস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তারা জানান, গত দুই ধরে ব্রহ্মপুত্রের ভয়াবহ ভাঙ্গনের মুখে তারা ঘরবাড়ী সরাতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। তাদের অভিযোগ, ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙ্গন ঠেকাতে এবং ভাঙ্গনের শিকার অসহায় মানুষগুলোর সাহায্যে আজও সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ের কেউ কোন সাহায্যের হাত বাড়ায়নি। অবিলম্বে ভাঙ্গন ঠেকানোর উদ্যোগ না নিলে এবছর কলুরচর গ্রামেটির প্রায় এক হাজার মানুষ নদের গর্ভে তাদের বসতভিটা হারাবে। তবে ব্রহ্মপুত্র নদের কুলুরচর এলাকায় ভাঙনের ব্যাপারে শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. হাছানুজ্জামান বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের শেরপুর ফেরিঘাট পয়েন্টে পানি বাড়লেও এখনও বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভাঙনের ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না বলে জানান।

শেরপুরের চরপক্ষীমারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আকবর আলী জানান, বিগত বছরের বন্যা মৌসুমে কুলুরচর গ্রামের প্রায় ৩০০ ঘরবাড়ী ব্রহ্মপুত্র নদের গর্ভে বিলীন হয়েছে। আর বিগত বছরের ন্যায় এবছরও ভয়াবহ ভাঙ্গন চলছে। গত দুই দিনে ৪৮টি ঘরবাড়ী নদের গর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়া এ ইউনিয়নের বেপারী পাড়া, কুলুরচর, ডাকপাড়া, চুনিয়ারচর ও ভাগল গ্রামের প্রায় ৫ হাজার মানুষ বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি ও ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গনের শিকার অসহায় মানুষগুলো নানা অভাব অনটনের মধ্যে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

এ ব্যাপারে শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আইরীন ফারজানা চরপক্ষীিমারী ইউনিয়নের কুলুরচর এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনের ফলে বেশকিছু বাড়ীঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বিষয়টি সরেজমিনে দেখার জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে (পিআইও) ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তিনি এলে বিস্তারিত জানা যাবে।

(এইচবি/অ/আগস্ট ২১, ২০১৪)