বরগুনা প্রতিনিধি : বরগুনা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের বেগম ফজিলাতুন্নেসা মহিলা হোষ্টেলে প্রায় শতাধিক ছাত্রী অবস্থান করে পড়াশোনা করছেন। পাথরঘাটা, বামনা বেতাগী মঠবাড়িয়াসহ আশপাশের এলাকাগুলো থেকে দুরত্ব সমস্যার কারণে শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ হোস্টেলে থাকতে হচ্ছে। এছাড়াও নিরাপত্তার কারণে মেয়েরা ‘সেফ হোম’ হিসেবে হোস্টেলকে বেছে নিয়েছে। এসব শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মেয়েদের নিরাপত্তা রক্ষা ও দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা হোস্টেল সুপার লিয়াকত হোসেন নিজেই ছেলেদের প্রাইভেট পড়িয়ে হোস্টেলকে অনিরাপদ করেছেন।

গত শনিবার বিকেলে বরগুনা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মহিলা হোষ্টেলে গিয়ে দেখা যায়, হোস্টেল সুপার লিয়াকত হোসেন মহিলা হোষ্টেলের একটি কক্ষে ৭/৮জন ছেলেকে প্রাইভেট পড়াচ্ছেন। মেয়েদের হোষ্টেলের রুমে ছেলেদের প্রাইভেট পাড়নোর বিষয়টির বৈধতা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, হ্যা এটা বৈধ। সবাই বাসায় প্রাইভেট পড়ান, আমিও আমার আবাসস্থলে পড়াচ্ছি। মেয়েদের নিরাপত্তার সমস্যা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এতে অনিরাপত্তার কিছু নেই। আমিতো আছি। আমার স্ত্রী আছেন। আমরা মেয়েদের ভালো মন্দ দেখাশোনা করছি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই হোষ্টেলের একাধিক ছাত্রী হোষ্টেল সুপারের স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, স্যারের মিসেস যা বলেন আমাদের তাই শুনতে হয়। তিনি রাজি খুশি না থাকলে এখানে কেউ থাকতে পারেনা। যদি কোন ছাত্রী তার কথা না শুনেন তাহলে তাকে নানা কৌশলে এমনকি বহিরাগত ছেলেদের প্ররোচনা দিয়ে হয়রানী করে বের করে দেয়া হয়। হোষ্টেলের একজন কাজের মেয়ে আমাদের জন্য রাখা হলেও তিনি তাকে তার বাসায় কাজ করান। হোস্টেলে নতুন কেউ এলে সিট পাওয়া না পাওয়া নির্ভর করে সুপারের স্ত্রীর উপর। তার সদয় হলেই কেবল সিট মিলে।
সম্প্রতি সীমা রানী নামের এক ছাত্রীকে জোর করে হোস্টেল থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। সীমার অপরাধ, তার কক্ষের জানালা বহিরাগতরা কে বা কাহারা ইট মেরে কাঁচ ভেঙেছিল। বাইরের কে বা কারা ইট মেরেছে এতেই সীমাকে বের করে দেন ওই সুপরের স্ত্রী।
ছাত্রীদের জন্য জন্য হলরুমে টিভি দেয়া হয়েছে, অথচ তার ইচ্ছে ছাড়া ছাত্রীদের টিভি দেখতে দেয়া হয়না। এমনকি দৈনিক খবরের কাগজ পড়তে পর্যন্ত ওনার অনুমতি দরকার হয়।
বরগুনা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. আবদুস সালাম বলেন, মেয়েদের অভিযোগের বিষয়টি আমার কানে এসেছে। মুলত হোস্টেলের মেয়েদের দেখাশোনার জন্য সুপারের স্ত্রীকে মৌখিকভাবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। যেহেতু মেয়েরা অভিযোগ করেছে, বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখবো।
(এমএইচএম/এএস/এপ্রিল ২০, ২০১৪)