স্টাফ রিপোর্টার : নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে শেয়ার দামের অস্বাভাবিক উত্থান-পতনের তদন্ত স্থগিত করার পর বৃহস্পতিবার আবার দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করেছে নতুন তালিকাভুক্ত হওয়া রবি আজিয়াটা।

এর আগে মঙ্গলবার বিএসইসি থেকে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক উত্থান-পতন তদন্ত করতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জকে (সিএসই) নির্দেশ দেয়া হয়।

বিএসইসির এ-সংক্রান্ত নির্দেশনায় ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে যেসব কোম্পানির শেয়ারের দাম ৫০ শতাংশ বেড়েছে বা কমেছে, এর পেছনে কোনো কারসাজি রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়।

সেই সঙ্গে এক মাসে যেসব কোম্পানির গড় লেনদেনের পরিমাণ আগের ছয় মাসের গড় লেনদেনের চেয়ে পাঁচগুণের বেশি বেড়েছে, যেসব কোম্পানির বার্ষিক বা প্রান্তিক শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫০ শতাংশের বেশি উত্থান-পতন ঘটেছে, মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসআই) প্রকাশের আগের ১০ কার্যদিবসে যেসব কোম্পানির দাম ও লেনদেন ৩০ শতাংশের কম-বেশি হয়েছে, সেসব কোম্পানির বিষয়েও তদন্ত করতে বলা হয়।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন নির্দেশনা আসার আগে টানা ১৩ কার্যদিবস দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে রবি। তবে নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদন্তের নির্দেশ আসায় বুধবার লেনদেনের শুরু থেকেই রবির শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়ে যায়। বিনিয়োগকারীদের ব্যাপক বিক্রির চাপে এক পর্যায়ে রবির শেয়ার দাম আগের দিনের তুলনায় কমে যায়। যদিও শেষদিকের লেনদেনে শেয়ার দাম ৪০ পয়সা বাড়ে।

নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও আইপিও খরচের জন্য প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে (আইপিও) শেয়ার ছেড়ে ৫২৩ কোটি ৭৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৪০ টাকা সংগ্রহ করা রবির শেয়ার গত ২৪ ডিসেম্বর থেকে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয়।

লেনদেন শুরুর দিন থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা ১৩ কার্যদিবস যে কোম্পানির শেয়ারের একপ্রকার বিক্রেতা সংকট ছিল, বুধবার সেই কোম্পানির শেয়ার রেকর্ড পরিমাণ লেনদেন হয়। রবির শেয়ার বিক্রির চাপ গিয়ে পড়ে অন্য প্রতিষ্ঠানের ওপরও। এতে মূল্য সূচকের বড় পতন হয়।

পরিস্থিতি সামাল দিতে তদন্তের নির্দেশ দেয়ার একদিন পরেই বুধবার বিকেলে তা স্থগিত করার নির্দেশ দেয় বিএসইসি। এরপর বৃহস্পতিবার লেনদেন শুরু হতেই আবার রবির শেয়ার দাম বাড়তে থাকে। কয়েক মিনিটের মধ্যে দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে হল্টেড হয়েছে কোম্পানিটি।

এদিন লেনদেনের শুরুতে ৬৯ টাকা করে কোম্পানিটির আট হাজার ১০০ শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে। তবে বিনিয়োগকারীরা এ দামে বিক্রি করতে রাজি হননি। এরপর দফায় দফায় দাম বেড়ে ৭০ টাকা ১০ পয়সা করে শেয়ার কেনার প্রস্তাব আসে, যা দিনের সর্বোচ্চ দাম। সার্কিট ব্রেকারের কারণে আজ এর ওপরে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়তে পারবে না।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দিনের এই সর্বোচ্চ দামে শেয়ার কেনার প্রস্তাব বাড়ছে। তবে যেসব বিনিয়োগকারীদের কাছ কোম্পানিটির শেয়ার আছে তারা তা বিক্রি করতে চাচ্ছেন না। ফলে ক্রেতা থাকলেও বিক্রেতার ঘর খালি পড়ে আছে।

কোম্পানিটির শেয়ারের এভাবে দাম বাড়াকে বেশ আগেই অস্বাভাবিক বলেছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষ। এ জন্য বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে সতর্কবার্তাও প্রকাশ করেছে ডিএসই।

ডিএসই জানিয়েছে, রবির শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণে ৪ জানুয়ারি কোম্পানিটিকে নোটিশ করা হয়। জবাবে কোম্পানিটি জানিয়েছে- শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম বাড়ার পেছনে কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদশীল তথ্য নেই।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ১৪, ২০২১)