স্টাফ রিপোর্টার : যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। দেশে ফিরবেন কি ফিরবেন না, এ নিয়ে যারা এতদিন সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছিলেন তাদের অনেকেই এখন স্বাস্থ্য অধিদফতরের নতুন নির্দেশনায় (কোয়ারেন্টাইনের সময় ১৫ দিনের বদলে কমিয়ে চারদিন) দ্রুত দেশে ফেরার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। বিভিন্ন এয়ারলাইন্স অফিসে টিকিট কাটার জন্য অনেকেই ভিড় করছেন।

যুক্তরাজ্য প্রবাসী একাধিক বাংলাদেশি এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে জানান, দু-এক বছর অন্তর এক-দেড় মাসের জন্য দেশে ফেরার পরিকল্পনা থাকে তাদের। কিন্তু ২০২০ সাল জুড়ে বিশ্ব মহামারি করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেকেই পরিকল্পনামাফিক সময়ে দেশে প্রয়োজনে কিংবা বেড়াতে আসতে পারেননি। তাছাড়া যুক্তরাজ্যে নতুন ধরনের করোনাভাইরাসের স্ট্রেইনের সংক্রমণের কারণে বাংলাদেশে ফেরার ক্ষেত্রে বছরের শুরুতেই বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশনা জারি হয়।

তারা বলেন, মাস খানেকের জন্য দেশে ফিরে যদি ১৫ দিন হোটেলেই বন্দি থাকতে হয় তাহলে আর ফিরে লাভ কী? তাই ১৫ দিনের বদলে চারদিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা জারি হওয়ায় তারা আগ্রহী হচ্ছেন।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্মরত স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, যুক্তরাজ্যফেরত যাত্রীদের কোয়ারেন্টাইনের সময় কমানো হলেও প্রত্যেক যাত্রীর প্রতি বিশেষ নজরদারি থাকবে। চারদিন পর করোনা নেগেটিভ এলে তারা বাসায় কোয়ারেন্টাইনে যাবেন তবে সেখানেও তারা পুলিশি প্রহরাতেই থাকবেন। বাসার বাইরে যাওয়া তো দূরের কথা নির্দিষ্ট কক্ষেই তাদের অবস্থান নিশ্চিত করা হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

গত ১ জানুয়ারি থেকে আজ শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) পর্যন্ত যারা ফিরেছেন তাদের সকলকে বাধ্যতামূলকভাবে ১৫ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হয়েছে এবং হচ্ছে। কিন্তু শনিবার (১৬ জানুয়ারি) থেকে নতুন নিয়মে যুক্তরাজ্যফেরত যাত্রীদের সরকার নির্ধারিত চারদিন আবাসিক হোটেল কিংবা সরকারি কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকতে হবে। চারদিন পর আরটি-পিসিআর পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ পেলে তাদের নিজ বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে। আর পজিটিভ পেলে হাসপাতালে পাঠানো হবে। সেখানে নিজ খরচে চিকিৎসা নেবেন।

এদিকে শাহজালাল বিমানবন্দরে ধীরে ধীরে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা ফ্লাইট ও যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (১৪ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে ১৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত) মোট ৩০টি ফ্লাইটে চার হাজার ৬৮৬ জন দেশে ফিরেছেন। তাদের মধ্যে আটটি ফ্লাইটের ২৫ জন যাত্রীকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। ২৫ জনের মধ্যে ২৩ জনই যুক্তরাজ্যফেরত। আর বাকি দুজন আরটি-পিসিআর সনদের বদলে সাধারণ সনদ নিয়ে আসায় তাদের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ১৫, ২০২১)