আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইন্দোনেশিয়ার সুলায়েসি দ্বীপে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৬ জনে দাঁড়িয়েছে। শনিবার (১৬ জানুয়ারি) দিনভর উদ্ধার অভিযানে আরও ১১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। রোববারও (১৭ জানুয়ারি) উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ধ্বংসস্তুপের নিচে আরও কেউ আটকা পড়ে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ভূমিকম্পের আঘাতে অন্তত ৮২০ জন আহত হয়েছেন। গৃহহারা হয়েছেন কমপক্ষে ১৫ হাজার মানুষ। স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোরে সুলাওসি দ্বীপে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৬ দশমিক ২। ভূমিকম্পের পর কয়েক হাজার মানুষকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেয়া হয়।

ভূমিকম্পের পর বেশ কয়েকবার পরাঘাত (আফটার শক) অনুভূত হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ প্রশমন সংস্থা জানিয়েছে, ৬ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পের একদিন পর পশ্চিম সুলায়েসি জেলা এবং মামুজু ও মাজিনে এলাকায় ৫ মাত্রার পরাঘাত অনুভূত হয়েছে। তবে এ থেকে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া, জলবায়ু এবং ভূ-প্রকৃতির এজেন্সি প্রধান দ্বিকোরিতা কর্নাবতী জানিয়েছেন, রোববার সকাল পর্যন্ত ৫৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ভূমিকম্পে একটি হাসপাতাল ধসে পড়েছে। ওই হাসপাতালে ১২ জনের বেশি চিকিৎসক এবং নার্স ছিলেন। তারা ধ্বংসস্তুপের নিচে আটকা পড়ে থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া কমপক্ষে একটি হোটেল আংশিক ভেঙে পড়েছে।

শুক্রবারের ওই শক্তিশালী ভূমিকম্পে লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রায় ১৫ হাজার বাসিন্দা নিজেদের বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়া আরও প্রায় ৮২০ জন গুরুতর আহত হয়েছে। ভূমিকম্পে মামুজু শহরের বিমানবন্দরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ার রেড ক্রস জানিয়েছে, তারা ঘটনাস্থলে ওষুধ এবং ত্রাণ সরবরাহ করতে গিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তাদের বেশ কয়েকটি টিম ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়া লোকজনকে খুঁজে বের করতে কাজ করে যাচ্ছেন।

শুক্রবার মামুজু থেকে ৩৬ কিলোমিটার দক্ষিণে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর গভীরতা ছিল ১৮ কিলোমিটার। প্রশান্ত মহাসাগরীয় রিং অব ফায়ারে অবস্থানের কারণে ইন্দোনেশিয়ায় প্রায়ই ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে থাকে।

এর আগে ২০১৮ সালে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প ও এরপর সুনামির আঘাতে ৪ হাজার তিনশো জনের মৃত্যু হয় বলে ধারণা করা হয়। এর মধ্যে অনেকেরই কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। ২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর ৯ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্প ও সুনামির আঘাতে ১ লাখ ৭০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ১৭, ২০২১)