গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় আধিপত্য বিস্তার ও সরকারি গাছ কাটা নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অর্ধশত লোক আহত হয়েছে।

আজ রোববার সকালে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কুশলী গ্রামের মাদ্রাসার সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কুশলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পারভেজ রেজা ও মেম্বার মিরাজ গাজীর মধ্যে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। সম্প্রতি কুশলী বাজার এলাকায় রাস্তার পাশের ৬০/৬৫ টি সরকারি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ মিরাজ গাজীর লোকজন কেটে নেয়। এ নিয়ে চেয়ারম্যান ও মেম্বারের সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করে।
আজ রোববার সকালে এ নিয়ে দুই গ্রুপের সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তফা,সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সোলায়মান বিশ্বাস,ইউপি চেয়ারম্যান পারভেজ রেজাসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু, সমঝোতা বৈঠক শেষেই আবার বিবাদমান দু’গ্রুপের লোকজন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। সকাল ৯টা থেকে থেমে থেমে বেলা সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ চলে। এতে উভয় গ্রুপের অন্তত অর্ধশত লোক আহত হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মারাত্মক আহত ২২ জনকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
কুশলী ইউপি চেয়ারম্যান পারভেজ রেজা জানিয়েছেন, সম্প্রতি মেম্বার মিরাজ গাজীর লোকজন কুশলী বাজার এলাকার রাস্তা থেকে অর্ধশতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির সরকারি গাছ কেটে নিয়ে যায়। এ নিয়ে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতি বৈঠক ডাকা হয়। কিন্তু, বৈঠকে মেম্বার মিরাজ গাজী উপস্থিত হননি। বৈঠক শেষে মেম্বারের লোকজন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে আমার সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়।
মেম্বার মিরাজ গাজী জানিয়েছেন, পরিষদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার সাথে চেয়ারম্যানের মত পার্থক্য ছিল। এলাকায় সরকারি গাছ কাটা নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব চলছিল। বিষয়টি নিয়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বৈঠকে বসেন। কিন্তু, আমি ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলাম না। শুনেছি বৈঠক শেষে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে, এলজিইডির মালিকানাধীন গাছ কেটে নেয়া হলেও তা জানেন না টুঙ্গিপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মঞ্জুর রশিদ। এ বিষয়ে তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলতে বলেন।
টুঙ্গিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান গাজী গোলাম মোস্তাফা জানান, এলাকার দু’গ্রুপের দ্বন্দ্ব নিয়ে আমরা শালিশ বৈঠকে মিলিত হই। বৈঠকে উভয় গ্রুপের মধ্যে সমঝোতা হয়। আমরা চলে আসার পরে তারা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
(এমএইচএম/এএস/এপ্রিল ২০, ২০১৪)