স্টাফ রিপোর্টার : মানবদেহে (ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল) টিকা প্রয়োগ করতে ইথিক্যাল ক্লিয়ারেন্স বা নীতিগত অনুমোদনের জন্য বাংলাদেশ চিকিৎসা গবেষণা পরিষদের (বিএমআরসি) কাছে আবেদন করেছে বাংলাদেশের একমাত্র করোনার টিকা উদ্ভাবনকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড।

রবিবার (১৭ জানুয়ারি) এ আবেদন করে তারা। গ্লোব বায়োটেক আশা করছে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি মাসেই তারা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যেতে পারবে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গ্লোব বায়োটেক লিমিটেডের কোয়ালিটি অ্যান্ড রেগুলেটরি অপারেশন্সের ম্যানেজার ও ইনচার্জ এবং টিকা আবিষ্কার গবেষক দলের সদস্য মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করতে হলে দুটি অনুমোদন লাগে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ইথিক্যাল ক্লিয়ারেন্স এবং আরেকটি রেগুলেটরি অনুমোদন। আজকে আমরা ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য বিএমআরসিতে আবেদন করেছি। ইথিক্যাল ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার পর আমরা ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরে রেগুলেটরি অনুমোদনের জন্য আবেদন জমা দেব। তারা সেই অনুমোদন দিলে আমাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হবে। অর্থাৎ আমাদের টিকা মানবদেহে প্রয়োগ শুরু হবে।’

মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আরও বলেন, ‘আমরা যে প্রযুক্তিতে ভ্যাকসিনটা তৈরি করেছি, সেই প্রযুক্তিতে যুক্তরাষ্ট্রের মডার্না তৈরি করেছে। তারা এথিক্যাল ক্লিয়ারেন্স চারদিনে পেয়েছিল। আমাদের বিএমআরসি কতদিনে দিবে, তা তারাই ভালো বলতে পারবে।’

‘আমাদের টার্গেট এ মাসেই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যাওয়া। আমাদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের যে পিআই (প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর), তিনি বলেছেন সব অনুমোদন পেলে সাতদিনের মধ্যেই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যাওয়া সম্ভব। আমরা আশা করছি, এ মাসেই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে যেতে পারবো’, যোগ করেন টিকা উদ্ভাবনকারী প্রতিষ্ঠানের এই কর্মকর্তা।

গ্লোব বায়োটেক টিকা উদ্ভাবন দাবির পরপরই আশা প্রকাশ করেছিল, ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারির মধ্যে তারা বাজারে টিকা নিয়ে আসবে। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। এখন পর্যন্ত তারা মানবদেহে প্রয়োগেই যেতে পারেনি। অন্যদিকে বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে করোনার টিকা বাজারে নিয়ে এসেছে।

সম্প্রতি রিসার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের অ্যাসিসটেন্ট ম্যানেজার অ্যান্ড ইনচার্জ ড. আসিফ মাহমুদ জানিয়েছিলেন, জানুয়ারিতে মানবদেহে ট্রায়াল শুরু করতে পারলে ছয় মাসের মধ্যে টিকা বাজারে আনতে পারবেন তারা।

গ্লোব বায়োটেক প্রাণীদেহে সফলতার পর মানবদেহে পরীক্ষার জন্য সিআরও প্রতিষ্ঠান হিসেবে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর,বি) সঙ্গে চুক্তি করেছিল।

তাদের অভিযোগ, আইসিডিডিআরবি ইচ্ছা করে দুই মাস সময় নষ্ট করেছে। এই অভিযোগে ইতোমধ্যে আইসিডিডিআর, বির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছে গ্লোব বায়োটেক। তারা নতুন সিআরও প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিআরও বাংলাদেশ নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ১৭, ২০২১)