নীলকন্ঠ আইচ মজুমদার, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) : ঈশ্বরগঞ্জে ফুলের ব্যবসায় সফলতা অর্জন করেছেন সঞ্জয়। করোনায় ব্যবসায় প্রায় বন্ধ হবার উপক্রম হয়েছিল। করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর থেকে ব্যবসায় আশার প্রদীপ দেখতে পাচ্ছেন সঞ্জয়। ফুলকে ভালোবেসে জীবনের অর্থনৈতিক পরিবর্তনের স্বপ্ন নিয়ে ব্যবসায় আসা তরুণ সঞ্জয় গৌড় (৩২) স্বল্প সময়েই সফলতার মুখ দেখতে পেয়েছেন। 

ঈশ্বরগঞ্জ পৌর শহরে কালীবাড়ী রোডে অবস্থিত পায়েল ফ্লাওয়ার হাউজটি উপজেলার একমাত্র ফুলের দোকান। চকুরির আশা বাদ দিয়ে আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য শুরু করেন এ ব্যবসা। মাত্র পাঁচ বছর পূর্বে প্রতিষ্ঠিত এ ব্যবসা দিয়ে চলছে সংসারের খরচ পাশাপাশি হচ্ছে সঞ্চয়। ফুলের গন্ধ তার মনকে যেমন করেছে আকৃষ্ট তেমনি আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় এ ব্যবসার পরিধি দিন দিন পরিবর্তন ঘটাচ্ছেন সঞ্জয়। সাথে তাকে সার্বক্ষণিক এ কাজে সহযোগিতা করছেন তার ছোট ভাই ঋত্বিক গৌড়।

তার সাথে কথা বলে জানা যায়, ফুলের দোকান থেকে সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতিমাসে আয় হচ্ছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। করোনা কালে বিভিন্ন অনুষ্ঠান বন্ধ থাকায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখিন হওয়ার পর ঘুরে দাঁড়িয়েছেন কিছুটা। একসময় ময়মনসিংহ থেকে ফুল এনে ব্যবসা করার কারণে খুব একটা লাভ করা সম্ভব হয়নি। এখন প্রতি সপ্তাহে ঢাকা থেকে আনা হচ্ছে গাঁদা, গোলাপ, রজনী গন্ধা, গ্লাডিওলি, জারবেরাস, চন্দ্র মল্লিকা, কাঠ বেলী ও চেরি ফুল। যার ফলে লাভ যেমন বেড়েছে তেমনি বৃদ্ধি পেয়েছে ফুলের মান।

এছাড়াও সাথে চলে কর্কশীট দিয়ে বিভিন্ন ধরণের নকশার কাজ যা শোভা পায় বিয়ের কুঞ্জ, গাঁয়ে হলুদ কিংবা জন্মদিনের অনুষ্ঠানে। সাথে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের ফুলের মালা আর জন্মদিনের অনুষ্ঠান পালনের সামগ্রী। ২১ ফেব্রুয়ারি, ২৬ মার্চ, ১৬ ডিসেম্বর থাকে ফুলের ব্যাপক চাহিদা। প্রতিবারই এসব অনুষ্ঠানে জন্য তৈরি হয়ে থাকে প্রায় শতাধিক ফুলের ঢালা।

এছাড়াও ১লা বৈশাখ, ১৪ ফ্রেব্রুয়ারি, ১৫ আগস্ট ও ৯ই ডিসেম্বর ঈশ্বরগঞ্জ মুক্ত দিবসেও তৈরি হয়ে থাকে এসব ফুলের ঢালা। বিভিন্ন দপ্তরের অনুষ্ঠানের পাশাপাশি রয়েছে সংবর্ধণা। এসব অনুষ্ঠান বর্তমানে ফুলের তোড়া ছাড়া যেন অপূর্ণই থেকে যায়। এছাড়াও প্রায় সারা বছরই রয়েছে বিয়ের গাড়ী ও বাসার ঘর সাজানোর কাজ। প্রায় প্রতি শুক্রবারই বিয়ের অনুষ্ঠান থাকায় সবকিছু বন্ধ থাকার পরও তাদের পার করতে হয় ব্যস্ত সময়।

সঞ্জয় গৌড় বলেন, প্রাকৃতিক বিভিন্ন সমস্যার কারণে প্রায় সময়ই ফুল পঁচে যায় তখন ক্ষতির সম্মুখিন হতে হয়। কিন্তু জীবন পরিবর্তনের স্বপ্ন আর ফুলের গন্ধ যেন আঁকড়ে ধরেছে আমার জীবনকে। ফুলের চাহিদা কেবল শহর অঞ্চলে নয় এর চাহিদা এখন গ্রামাঞ্চলেও বৃদ্ধি পাচ্ছে। করোনার প্রভাব কম থাকায় ফুলের ব্যবসায় এখন কিছুটা গতি এসেছে। ভালোভাবে ব্যবসা চললে করোনাকালীন সময়ের ঋণ পরিশোধ করা যাবে।

(এন/এসপি/জানুয়ারি ২০, ২০২১)