ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ভূমি ও গৃহহীনদের একটি সুন্দর ঘরের স্বপ্ন পূরণের প্রথম ধাপে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ৩৬ পরিবার পেলো একটি আধাপাকা বাড়ি। মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে এসব ঘর ও জমি দেওয়া হয়।ভূমি ও গৃহহীন মানুষকে বিনামূল্যে ঘর করে দেওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্বে অন্যন্য নজির সৃষ্টি করলো বাংলাদেশ।

শনিবার (১৩ জানুয়ারি) গণভবন থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সে আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘর বিতরণের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে মুজিববর্ষ ঘোষণা করে সরকার। মুজিববর্ষে কেউ গৃহহীন থাকবে না, এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে আশ্রায়ন-২ প্রকল্পের অধীনে চলমান কর্মসূচির প্রথম পর্যায়ে সারাদেশে একসাথে ঘর পেলো ৬৯ হাজার ৯০৪ ভ’মি ও গৃহহীন পরিবার। দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের ঘর করে দিতে এখন পর্যন্ত প্রায় নয় লাখ পরিবারকে তালিকাভুক্ত করেছে সরকার।

ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে দুই শতাংশ খাস জমির মালিকানা দিয়ে বিনা পয়সায় দুই কক্ষবিশিষ্ট ঘর মুজিববর্ষের উপহার হিসেবে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে ব্যারাকের মাধ্যমে ২১টি জেলার ৩৬টি উপজেলায় ৪৪ প্রকল্পের মাধ্যমে তিন হাজার ৭১৫টি পরিবারকে ব্যারাকে পুনর্বাসন করা হয়।সংশ্লিষ্টরা জানান, এটিই বিশ্বে গৃহহীন মানুষকে বিনামূল্যে ঘর করে দেওয়ার সবচেয়ে বড় কর্মসূচি। এর মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে নতুন ইতিহাস গড়লো বাংলাদেশ।

প্রতিটি ঘর দুই কক্ষ বিশিষ্ট। এতে দুটি রুম ছাড়াও সামনে একটি বারান্দা, একটি টয়লেট, একটি রান্নাঘর এবং একটি খোলা জায়গা থাকবে। পুরো ঘরটি নির্মাণের জন্য খরচ হবে এক লাখ ৭১ হাজার টাকা এবং মালামাল পরিবহনের জন্য চার হাজার টাকা।

শৈলকূপা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে যারা প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেলেন তাদের চোখে-মুখে খুশির ঝিলিক। প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তারা।

উপজেলার ফুলহরি ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের বিধবা নুজলা খতুন (৬৫) বলেন, ছেলে মেয়ে ও নাতিদের নিয়ে বাঁশের কঞ্চির বেড়ার ঝুপড়িতে থাকি। দিন মজুর খেটে কোনো রকমে জীবন চলছে। নিজের একটা ঘর হবে কোনোদিন ভাবিনি। প্রধানমন্ত্রীকে দোয়া করি।

শৈলকূপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা লিজা বলেন সারা দুনিয়াতে এটি প্রথম ঘটনা এবং একমাত্র ঘটনা একসঙ্গে বিনে পয়সায় এত ঘর করে দেওয়া। মাদার অব হিউম্যানিটি সারা দুনিয়াতে একটি নজির স্থাপন করলেন। ৩৬ পরিবারকে ঘর দেওয়ার পর থেকে আগামী এক মাসের মধ্যে আরও ঘর নির্মাণের জন্য বরাদ্দ আসবে বলে তিনি জানান ।আশ্রায়ণ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো, ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্ন অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন, ঋণপ্রদান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা এবং আয় বাড়ে এমন কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ।

(একে/এসপি/জানুয়ারি ২৩, ২০২১)