ফরিদপুর প্রতিনিধি : মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে সারাদেশে ৬৬ হাজার ১ শত ৮৯ টি ঘর পাচ্ছেন ভূমিহীন পরিবার। তার মধ্যে ফরিদপুর জেলায় প্রথম পর্যায়ে ১ হাজার ৪৮০ জন গৃহ ও ভূমিহীনের মাঝে ঘর ও জমি প্রদান করা হয়। 

শনিবার সকাল ১০.৩০ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালভাবে উদ্ধোধন করেন। ১ হাজার ৪৮০টি ভূমিহীন পরিবারকে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জমিতে তৈরী সেমি পাকা ঘর উপহার দেওয়া হয়েছে।

এরই অংশ হিসাবে ফরিদপুরে ঘর ও জমি প্রদান অনুষ্ঠানে অংশে নিয়ে জেলা প্রশাসক অতুল সরকার ঘরের চাবি ও জমির কাগজপত্র প্রদান করেন। ঘরের চাবি ও জমি হস্তান্তরের পূর্বে জাতীয় অনুষ্ঠানে ভিডিও কণফারেন্সিং এর যুক্ত হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য ও অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়।

ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের হলরুমে এই উপলক্ষে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, পুলিশ সুপার মোঃ আলিমুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বীরমুক্তিযোদ্ধা, উপকার ভোগীসহ সমাজের সর্বস্তরের ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহণ করে।

সদর উপজেলা হল রুমে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাসুম রেজার সভাপতিত্বে উদ্ধোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে ঘরের চাবি ও জমির কাগজ তুলে দেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। এসময় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোঃ আলিমুজ্জামান (বিপিএম সেবা), অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) দীপক কুমার রায়, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা, কৈজুরী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ ইফতেখার হোসেন ইকু মিয়া, মাচ্চর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জাহিদ মুন্সি, সদর উপজেলা এলজি ইডি প্রকৌশলী মোঃ আজাহারুল ইসলাম প্রমূখ।

একই সময় জেলার ৯টি উপজেলায় একযোগে প্রকৃত গৃহহীনদের প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুত মোট ১ হাজার ৪৮০ জন ব্যক্তির মাঝে ঘর ও জমি প্রদান করা হয়। এর আগে সকালে জেলা সদরের মাচ্চর ইউনিয়নের চন্ডিপুরের নির্মিত ঘর পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক।

ঘরের চাবি ও জমি হস্তান্তরের পূর্বে জাতীয় অনুষ্ঠানে ভিডিও কণফারেন্সিং এর যুক্ত হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য ও অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনায় সারাদেশের মতো ফরিদপুরেও ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসনের জন্য প্রথম দফায় নির্মিত হয়েছে ১ হাজার ৪৮০টি বসতঘর। এছাড়া মোট ৩ দফায় মোট নির্মিত হচ্ছে ২ হাজার ৩৫ টি ঘর। ঘরসমূহ নির্মানে সর্বমোট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩৫ কোটি ৬১ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

উল্লেখ্য জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের নেতৃত্বে নয়টি উপজেলার ইউএনও এবং এসিল্যান্ডদের তদারকিতে গড়ে উঠছে আশ্রয়হীন মানুষের স্বপ্নের ঠিকানা 'স্বপ্ননীড়'। গৃহনির্মাণের এই কাজে সমানতালে ভূমিকা রেখেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী। 'আশ্রয়ণের অধিকার- শেখ হাসিনার উপহার' স্লোগান সংবলিত এ প্রকল্পে সারাদেশের মতো ফরিদপুর জেলার প্রতিটি ভূমিহীন-ঘরহীন পরিবারের জন্যও থাকছে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ঘর। প্রতিটি পরিবারের জন্য বানানো হচ্ছে দুই কক্ষবিশিষ্ট সেমিপাকা ঘর। পরিবার পিছু একটি ঘরের পাশাপাশি দেওয়া হচ্ছে ২ শতাংশ জমি।

আজ শনিবার প্রথম পর্যায়ে জেলার ফরিদপুর সদর উপজেলায় ২৯২ টি ঘর, আলফাডাঙ্গা উপজেলায় ২২০ টি ঘর, বোয়ালমারী উপজেলায় ৯২ টি ঘর, মধুখালী উপজেলায় ১৪৮ টি ঘর, নগরকান্দা উপজেলায় ১০৫ টি ঘর, সালথা উপজেলায় ৩৫ টি ঘর, ভাঙ্গা উপজেলায় ২৫০ টি ঘর, সদরপুর উপজেলায় ১৭৮ টি ঘর, চরভদ্রাসন উপজেলায় ১৫০ টি ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়। সরকারের এরকম কঠোর নির্দেশনা থাকায় ফরিদপুরের মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীরা দিনরাত এক করে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এ যেন আরেক মুক্তিযুদ্ধ। মুজিববর্ষে সকল ভূমিহীন ও গৃহহীনদের গৃহ নির্মাণ করে তাদেরকে পুনর্বাসন করার যুদ্ধ।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ২৩, ২০২১)