আবুল কালাম আজাদ, রাজবাড়ী : বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর ভরণপোষণের দায়িত্ব না নিয়ে ১০ বছর বয়সী ছোট ভাইকে নিরুদ্দেশ পাঠিয়ে দিলেন তার আপন ভাই ও ভাবি। ‘আমরা তোকে আর রাখব না, তোর মন যেখানে যেতে চায় চলে যাবি’ এই বলে তাকে ট্রেনে তুলে দেন তারা। 

ভুক্তভোগী শিশু রফিকুল ইসলামের বাড়ী নওগাঁ জেলার রানীনগর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের মৃত বাদেশ মন্ডলের ছেলে। গতকাল শনিবার (২৩ জানুয়ারি) রাতে তাকে রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুর রেলওয়ে স্টেশনে পাওয়া যায়।

রবিবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে স্থানীয় সোনার বাংলা সমাজ কল্যাণ ও ক্রীড়া সংসদের আহ্বায়ক এসএম হেলাল খন্দকার শিশুটিকে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কাছে নিয়ে যান।

শিশু রফিকুল জানান, তার বয়স ১০ বছর। সে রানীনগর স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়তো। তার বাবা-মা প্রায় এক বছর আগে মারা যান। তাদের মৃত্যুর পর থেকে একমাত্র আপন ভাই রফিকুলের কাছে থাকতো সে। তার ভাই রাজমিস্ত্রির কাজ করেন এবং নওগাঁর রানীনগরের একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। হঠাৎ শনিবার তার ভাই-ভাবি তাকে আর রাখতে পারবে না বলে রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেনে তুলে দেন।

স্থানীয় সোনার বাংলা সমাজ কল্যাণ ও ক্রীড়া সংসদের আহ্বায়ক এসএম হেলাল খন্দকার জানান, বহরপুর রেল স্টেশনের পাশেই তার বাড়ি। তিনি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ড করেন। গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেস ট্রেন চলে যাবার পর স্টেশনে এলোমেলোভাবে ঘুরতে দেখে রফিকুলকে বাড়িতে নিয়ে যান এবং বিস্তারিত জানার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে রাতেই বিষয়টি থানা পুলিশ ও ইউএনওর কাছে অবহিত করেন। পরে রোববার দুপুরে রফিকুলকে ইউএনওর কার্যালয়ে নিয়ে যান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বালিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আম্বিয়া সুলতানা বলেন, গতরাতে বহরপুর স্টেশনে এক সমাজকর্মী একটি শিশুকে পেয়েছেন। শিশুটির দেয়া তথ্যানুসারে নওগাঁর সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সঙ্গে কথা হয়েছে। শিশুটিকে তার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

(একে/এসপি/জানুয়ারি ২৫, ২০২১)