আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : ঝালকাঠির কাঠালিয়ার একটি ইট ভাটায় ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের নামে ৪লাখ টাকা আদায় করে সমুদয় অর্থ আত্মসাতে ব্যর্থ হয়ে বাধ্য হয়ে দুই লাখ টাকার রশিদ দিয়ে বাকী দুই লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এসিল্যান্ড সুমিত সাহার বিরুদ্ধে। 

ইট ভাটার অংশিদার মালিক মো. শাহিন আকন জানান, তাদের মালিকানাধীন মেসার্স ত্বোহা ব্রিকস ফিল্ডে গত ২৫ জানুয়ারি উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমিত সাহা, ওই অফিসের নাজির মাঈনুলসহ কয়েকজন পুলিশ ও দমকল বাহিনীর সদস্যারা হাজির হয়।

এ সময় এসিল্যান্ড সুমিত সাহা নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে অফিসের নাজির মাঈনুলকে ফায়ার সার্ভিসের লোকজনের সহায়তায় ইট ভাটায় পানি দিয়ে চুলা নিভিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন। অনেক অনুনয় বিনয়ের পর এসিল্যান্ড ইট ভাটায় নগদ দশ লাখ টাকা দাবি করলে ভাটার লোকজন তাদের কাছে নগদ এত টাকা নেই এসিল্যান্ড ক্ষুব্ধ হয়ে ইট ভাটার অপর মালিক মো. এনামুল হকের শ্বশুর হাবিবুর রহমান ও কর্মচারী মফিজুলকে আটক করে এসিল্যান্ড কার্যালয়ে নিয়ে যায়।

ওই অবস্থায় ভাটার মালিক শাহিন আকন তার আত্মীয়সহ বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে ধার দেনা করে ৪লাখ টাকা নিয়ে উপজেলা ভূমি অফিসে গিয়ে নাজির মাঈনুলের হাতে দিলে এসিল্যান্ড সাক্ষরিত ২ লাখ টাকার একটি রশিদ শাহিনের হাতে ধরিয়ে দেয়। ৪লাখ টাকার পরিবর্তে শাহিন ২লাখ টাকার রশিদ কেন জানতে চাইলে শাহিনকে হুমকী-ধামকি দিয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

ঘটনা জানাজানির পর থেকেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার অর্থ আতœসাতের বিষয়টি আপোসরফা করার জন্য ও ঘুষের ২লাখ টাকা ফেরত দেয়ার জন্য স্থানীয় সাংবাদিকসহ বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির সাথে তার ব্যবহৃত (ব্যক্তিগত ও অফিসিয়াল) নম্বর দিয়ে এবং স্ব-শরীরে যোগাযোগের চেষ্টা অব্যাহত রাখেন।

এসি ল্যান্ডের মতো উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুফল চন্দ্র গোলদার নিজেও তার ফেসবুকে আইডিতে একটি পোষ্ট দিলেও কিছু সময় পরে ২লাখ টাকা আত্মসাতের বিষয়টি ফাঁস হওয়ার পর সেই পোষ্টটি মুছে ফেলেন তিনি।

ভ্রাম্যমান আদালতের নামে প্রশাসনের এহেন ন্যাক্কার জনক ঘটনা সর্বত্র জানাজানি হলে এসিল্যান্ড সুমিত সাহা স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকের ম্যাসেঞ্জারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশনায় অভিযান করার দাবি করে ২লাখ টাকা জরিমানার তথ্য প্রদান করেন।

ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযানের নামে এসি ল্যান্ডের ২লাখ টাকা আত্মসাতের বিষয়টি সর্বত্র জানাজানি হলে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ধামাচাপা দিতে নানা কৌশল ও দৌড়-ঝাঁপের মাধ্যমে মরিয়া হয়ে ওঠেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুমিত সাহা।

সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড) সুমিত সাহা ৪ লাখ টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, অন্য কেউ টাকা নিয়েছে কি না তা আমার জানা নেই, আমি ২লাখ টাকা জরিমানা করেছি এবং কার রশিদ প্রদান করেছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুফল চন্দ্র গোলদার জানান, উল্লেখিত ব্রিকস ফিল্ডের অভিযানে ভ্রম্যমান আদালত ২লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে তাকে জানানা হয়েছে। এর বাইরে তিনি কিছু জানেন না বলেও দাবি করেন।

(টিবি/এসপি/জানুয়ারি ২৮, ২০২১)