আহমেদ ইসমাম, ঠাকুরগাঁও : ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার লেহেম্বা ইউনিয়নের দিঘীয়া গ্রামের আঁকাবাঁকা মেঠো পথ ধরে যত দুর দৃষ্টি যায় দেখাযায় শুধু হলুদের সমারোহ। পথের দুই ধারের অগনিত সরিষা ক্ষেতের হলুদ ফুলেই এ সমারোহ। আর এ হলুদের সমারোহের মাঝেই ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা যায় মৌ চাষিদের। 

সরিষার ফুলের মধু সংগ্রহ করতে তারা ক্ষেতের পাশেই বসিয়েছেন শত শত মৌচাক বাক্স। স্থানীয় এলাকাবাসীর কেউ নাম দিয়েছেন সরিষা গ্রাম আবার কেউ দিয়েছেন মধু গ্রাম।

রাণীশংকৈল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সুত্রমতে, উপজেলায় এবার সরিষার আবাদের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩ হাজার ৮শত ৫০ হেক্টর। কিন্তু লক্ষমাত্রার চেয়েও প্রায় ৩ হাজার ৩ শত ৫০ হেক্টর বেশি সরিষার আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার লেহেম্বা ইউনিয়নের দিঘীয়া গ্রামেই প্রায় একশ একর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। কৃষকরা এবারে বারি -১৪, বারি -১৫ বিনা -৪, বিনা -৯ জাতের সরিষার আবাদ করছে। এর মধ্যে ৫০ বিঘা জমির সরিষার বীজ বিনামূলে ১৫ জন কৃষকের মাঝে বিতরণ করেছে উপজেলা কৃষি অফিস।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, রেকর্ড পরিমাণ সরিষার চাষ এ গ্রামে এবারেই প্রথম। আগে ধান তুলে গম, ভুট্টা আবাদ করা হতো। তবে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের উৎসাহে এবার দীঘিয়া গ্রামে এত বড় অংশে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। যা ২-৩ হাজার টাকা খরচ করে বিঘা প্রতি ৭-৮ মণ করে সরিষা উত্তোলন করা যায়। আর বাজারে ২ হাজার থেকে ২২ ’শ টাকা মণ বিক্রি করতে পারি।

অন্যদিকে এ উপজেলায় এবারে ব্যাপক হারে সরিষার আবাদ হওয়ায় মৌ-চাষি সোহেল রানা দিঘীয়া এলাকায় ১২০ টি মৌচাক বাক্স বসিয়ে সপ্তাহে দু-মণের অধিক খাঁটি মধু সংগ্রহ করছেন। প্রতি কেজি মধু ৩৫০ থেকে ৪শ টাকায় বিক্রি করছেন তিনি । শীতের এই মৌসুমে গ্রামের মানুষেরা নির্ভেজাল খাঁটি মধু হাতের নাগালে পাওয়ায় খুশিতে আত্মহারা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপ পরিচালক কৃষিবীদ আফতাব হোসেন জানান, সরিষা খুব প্রয়োজনীয় একটি ফসল, এ এলাকার মানুষ সেটা তেমন বুঝতো না। আমি এবং আমার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা তাদের বুঝিয়ে এবারে সরিষা আবাদে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি করে ব্যাপকভাবে এ এলাকায় সরিষার আবাদ করাতে পেরেছি। তবে এর পাশাপাশি কৃষকদের মধু চাষের সফলতা দেখেওে আমি মুগ্ধ।

(আই/এসপি/জানুয়ারি ৩১, ২০২১)