রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি : ‘বাহে জারোত হাত পাও নুলা হয়া যাবার নাগছে। কম্বল দিয়ার জার ঠেকপার পাং না। জারতে গাও মোর শিংরি উঠে। ছাওয়া-পওয়াগুলা ঠরঠর করি কাঁপছে।’ জড়োসড়ো হয়ে বসে থাকা কুড়িগ্রাম সদরের মোগলবাসা ইউনিয়নের চর সিতাইঝাড়ের সত্তোর্ধ মকবুল মিয়া এসব কথা বলেন।

সোমবার সকালে তিনি মোগলবাসা ইউনিয়ন পরিষদে এসেছিলেন শীতবস্ত্রের খোঁজে।

মোগলবাসা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর জামাল বাবলু মিয়া জানান, আমার ইউনিয়নে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার মানুষের বসবাস। আমি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মাত্র ৭ থেকে ৮শ’ কম্বল বিতরণ করেছি। মানুষের চাপ সামাল দিতে পারছি না। বেসরকারি সংস্থা ও প্রভাবশালীরা এগিয়ে না আসলে হত দরিদ্র মানুষরা কোথা থেকে এত শীতবস্ত্র পাবে। করোনার কারণে এমনিতেই ঢাকা এবং অন্যান্য জেলাগুলোতে গিয়ে যারা কাজ করতো তাদের বেশির ভাগ লোক কাজ না থাকায় বাড়িতে ফিরে বসে আছে।

এ রকম অবস্থা জেলার বেশিরভাগ এলাকাগুলোতে। অনেকে কম্বল পেলেও সামান্য কম্বলে শীত নিবারণ করতে পারছে না। ফলে ভীষণ ঠান্ডায় দিন ও রাত কাটছে তাদের। বিকেল হলেই তীব্র ঠান্ডা হাওয়ায় বাইরে বের হওয়া কষ্ট হচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকেই ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টির মতো ঝড়তে থাকে শিশির। সকালটা ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকায় কৃষক ও দিনমজুরদের মাঠে কাজ করতে ভীষন সমস্যা হচ্ছে। অসুস্থ্য হয়ে পরছেন তারা। হঠাৎ করেই আবহাওয়া নিম্নগামী হওয়ায় বিপাকে পরেছে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা। বাড়ছে হাসপাতালগুলোতে শীতজনিত রোগীর আধিক্য।

কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. পুলক কুমার সরকার জানান, মাঝারি শৈত্য প্রবাহের ফলে হাসপাতালে ডায়েরিয়া ও নিউমেনিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে রোগীরা ভাল আছে।

এদিকে রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, সোমবার সকাল ৬টায় কুড়িগ্রামে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরকম অবস্থা আরো ২/৩দিন থাকতে পারে।

(পিএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২১)