আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর আওতাধীন গৌরনদী জোনাল অফিসে গ্রাহকদের সেবার নামে  নানা ভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। ভুক্তভোগী গ্রাহকরা উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেননা বলে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে।

সরেজমিনে গ্রাহক ও সংশ্লিষ্ট অফিসের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গৌরনদী জোনাল অফিসের আওতায় গৌরনদী পৌরসভাসহ সাতটি ইউনিয়ন, উজিরপুর ও বাবুগঞ্জ উপজেলার আশিংক এলাকায় প্রায় ৩৫ হাজার গ্রাহক রয়েছে। দীর্ঘ দিন যাবত সহকারী ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) ও সহকারী জুনিয়ার ইঞ্জিনিয়ারসহ গুরুত্বপূর্ন একাধিক পদ শূন্য রয়েছে। এ ছাড়া মালামাল সংকটের অজুহাত দেখিয়ে ওভারলোড ট্রান্সফরমার এবং সার্ভিস তারের অভাবে নতুন মিটার সংযোগ ও মিটারের টাকা জমা নেওয়া হচ্ছেনা। উজিরপুর উপজেলার হস্তিসুন্ড গ্রামের হাফিজুর রহমান, গৌরনদী উপজেলার সরিকল গ্রামের সরোয়ার হোসেন, খাঞ্জাপুর গ্রামের হরিপদ বাড়ৈ অভিযোগ করে বলেন, ‘গত দুই মাস যাবত নতুন সংযোগের জন্য এ অফিসে আমরা ধর্না দিচ্ছি। অফিসের লোকজন নানা তালবাহানা করে টাকা জমা নিচ্ছেনা। একাধিকবার গৌরনদী জোনাল অফিসে এসে হয়রানির শিকার হচ্ছি’। সুত্র মতে অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) সদর দপ্তরে মিটিং ও তদন্ত নিয়ে বেশীরভাগ সময় অফিসের বাইরে থাকেন। এছাড়া একজন মাত্র জুনিয়ার ইঞ্জিনিয়ার বিভিন্ন কাজে সাইডে থাকেন। অফিসের সময় প্রায়ই অফিসে কোন কর্মকর্তাকে পাওয়া যায় না।
জানাগেছে, গত ২৬ জানুয়ারি বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনায় লাইন ক্রু নির্মল শীল মারা যান। এ ঘটনার পর দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে কর্তৃপক্ষ এজিএম (নিপর) মো. আনছার উদ্দিন ও জুনিয়ার ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম আজাদকে সাময়িক বরখাস্থ করেন। পরবর্তীতে ওই দুই কর্মকর্তাদের ব্যপারে বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর এজিএম সিহাব উদ্দিনকে আহবায়ক, ২য় বার আরইবি বরিশালের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিবকে আহবায়ক ও সর্বশেষ বরিশাল ডেভলমেন্ট অধিদপ্তরের পরিচালক-১ এর প্রকল্প পরিচালক মো. জালাল উদ্দিনকে আহবায়ক করে পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনে এজিএম (নিপর) মো. আনছার উদ্দিন ও জুনিয়ার ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম আজাদকে নিদোর্ষ ও লাইন টেকনিশিয়ান কানাই লাল দাস ও মৃনাল কান্তি বিশ্বাসকে দায়ী করে রিপোর্টে প্রদান করেন। অভিযোগ রয়েছে অভিযুক্ত লাইন টেকনিশিয়ানদের সাথে বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার হেম চন্দ্র বৈদ্য’র সখ্যতা থাকার কারনে তাদের বিরুদ্ধে তিনি কোন শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহন করছেনা। অথচ তদন্ত কমিটির রিপোর্টে ওই দুই কর্মকর্তা নিদোর্ষ প্রমানিত হওয়া সত্বেও তাদের সামরিক বরখাস্ত প্রত্যাহর করা হয়নি। এ ছাড়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মচারী চাকরি বিধি-১৯৯২ সংশোধনী, ২০১২এর ধারা ৪৩ এবং উপধারা ০৩ অনুযায়ী ওই দুই কর্মকর্তার সায়িক বরখাস্তের আদেশ ৬০ কর্ম দিবস অতিক্রম করলে এ আদেশ বাতিল বলে গন্য হয়। এ আদেশ উপেক্ষা করে কিন্তু দীর্ঘ আট মাসেও তাদের কাজে যোগদান করতে দেয়া হয়নি কিবাং অদ্যাবধি তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্টানিক কোন অভিযোগ পত্র দায়ের করা হয়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমিতির একধাকি কর্মকর্তা জানান, সমিতির চাকরির বিধি আরইবি কর্তৃক প্রনীত নির্দ্দেশিকা হলেও এ চাকরি বিধি কেউ মাননছেনা। অভিযোগ অস্বীকার করে বরিশাল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজারের হেম চন্দ্র বৈদ্য বলেন, ‘আরইবি’র প্রধান কার্যালয় থেকে তদন্ত করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের কোন কাগজ আমি পাইনি। রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে’।
(টিবি/এএস/আগস্ট ২৪, ২০১৪)