আবুল কালাম আজাদ, রাজবাড়ী : এখানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার চলে বারোমাস। রাজবাড়ী পাংশার পদ্মা নদীর উপর হাবাসপুর ও বাহাদুরপুর ঘাটে সেরকম কোনো নৌ-পরিবহন না থাকায় রাজবাড়ী ও পাবনা এই দুটি জেলার অন্তত অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষের যাতায়তের অন্যতম ভরসা নৌকা। অসংখ্য ছাত্র ছাত্রী থেকে সাধারণ মানুষ প্রতিদিন জীবন জীবিকার তাগিদে প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই কোন রকম যাত্রী সুরক্ষা ছাড়াই নৌকাতেই পারাপার করেন এখানে।

সম্প্রতি দেশের বেশ কয়েকটি নদীতে নৌকাডুবির ঘটনার পরেও হুঁশ ফেরেনি প্রশাসনের। লাইফ জ্যাকেট ছাড়াই নৌকাতেই যাতায়াত করছে সাইকেল, মোটরবাইক সহ মানুষ। এলাকার মানুষের অভিযোগের খবর পেয়ে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা পৌঁছে যায় পাংশার বাহাদুরপুর ঘাটে। ওখানে গিয়েই মানুষের অভিযোগের প্রমাণ ধরা পড়ে আমাদের চোখে।

এলাকার মানুষ জানিয়েছেন, রাজবাড়ী ও পাবনা জেলার সহজতম যোগাযোগ মাধ্যম এই নদীপথ দিয়ে প্রতিদিন প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করেন। গ্রীষ্মকালে পানি কম ও নদীর বেশিরভাগ স্থানে চর জেগে থাকলেও বছরের বেশীরভাগ সময় প্রচুর পরিমানে পানি থাকায় নিত্য যাত্রীদের নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা নৌকা।

স্থানীয় বাসিন্দা জিল্লু বলেন, যাত্রী সুরক্ষার কোনও ব্যবস্থা নেই এখানে। তিনি আরও বলেন, প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই তাঁরা প্রতিদিনই নৌকাতেই সওয়ার হন। শুধু তাই নয়, নৌকায় নদী না পেরোতে চাইলে প্রায় ৫০-৬০ কিলোমিটার ঘুরে তবেই পাবনা শহরে পৌঁছাতে হয় মানুষদের। সুমন নামে এক ছাত্র বলেন, যাতায়াতের ভরসা একমাত্র নৌকাই’। বিশেষত বর্ষায় নদীতে যখন প্রচুর পানি থাকে তখন সমস্যা আরও তীব্র হয়। তবুও প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করতে হয় তাঁদের।

যাত্রীদের এই যন্ত্রনা থেকে মুক্তি দিতে পারে যদি পদ্মা নদীর বাহাদুরপুর ঘাটে একটি স্থায়ী নৌ-পরিবহনের ব্যবস্থা হয়। এমনই দাবি জানিয়েছেন এই নদী পেরিয়ে নিত্য যাতায়াতকারী যাত্রীরা। এই বিষয়ে এক নৌকা চালক বলেন, দু’বছরের জন্য ৬ লাখ টাকায় এই ঘাটের ডাক রয়েছে। যাত্রী সুরক্ষা বিষয়ে প্রশাসনের তরফে তাদের কোনও নির্দেশ বা প্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়া হয়নি।

তিনি দাবী করে বলেন, দূর্ঘটনা যেকোনও সময় ঘটতেই পারে। কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা ভেবেই তারা নৌকায় তাদের পারাপার করেন বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আলী বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলনা। আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। আমি বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলবো।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২১)