দশমিনা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় বন দপ্তরের বিট মাশুল না দিতে পেরে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এক রাখাল আত্মহত্যা করেছে। 

মৃতের মা মমতাজ বেগরে অভিযোগ, উপজেলার বন দপ্তরের চরহাদী বিট এলাকায় ১২টি মহিষ প্রবেশ করে। বিট কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান সঙ্গীয় বনরক্ষীসহ ওই মহিষ আটক করে বিট অফিসে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে ছেলে মহিষ রাখাল মোঃ সুমন হাওলাদার (১৬) ওই অফিসে গিয়ে মহিষ ছেড়ে দেবার অনুরোধ করে। এ সময় বিট কর্মকর্তা মি. মিজান সংরক্ষিত বনাঞ্চলে মহিষ প্রবেশ আইনে মামলার ভয়ভীতি দেখায়।

মামলা থেকে রক্ষা পেতে ওই কর্মকর্তা ১২ হাজার টাকা তাৎক্ষনিক দাবী করেন ও পুরো বছরের চুক্তিতে না আসলে বনাঞ্চল এড়িয়ে চলতে আদেশ করেন। পূর্বের দিন ২টি মহিষ ছাড়িয়ে আসতে ২ হাজার টাকা দিতে হয়েছে বিট কর্মকার্তা মিজানুর রহমানকে। তাই অফিসে যাবার পূর্বে মহিষ ছাড়ানোর মাশুল হিসেবে ঘর থেকে ৪ হাজার টাকা নিয়ে ওই কর্মকর্তার হাতে দিয়ে ক্ষমা চাইলেও আরও ৮ হাজার টাকার জন্য মহিষ আটকে রাখে। ঘরে টাকা না থাকায় হতাশা নিয়ে আমার ছেলে বিষপান করেছে।

সুমনের ভাই ইমন ও বাবা মোঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার জানায়, সন্ধ্যার পরে সুমন অসুস্থ্য হবার খবর পেয়ে বাড়িতে যাই। বিষ খেয়েছে শুনে ট্রলারে করে দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি। রাত পৌনে ১১টায় দশমিনা হাসপাতালের কর্তৃভ্যরত চিকিৎসক সুমনকে মৃত্য ঘোষণা করেন। দশমিনা থানা পুলিশ মৃতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছেন বলে ওসি মোঃ জসীম নিশ্চিত করেনে। মৃতের মা মমতাজ, বাবা আনোয়ার ও ভাই ইমনসহ ক্রোন্দনরত স্বজনরা বিট কর্মকর্তাকে মৃত্যুর ঘটনায় দুষছেন ও বিচার দাবী করেছেন।

অভিযোগের ঘটনায় চরহাদী বিট কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, আমি কারো কাছ থেকে টাকা নেইনা। সুমন আমার অফিসে এসে মহিষ নিজের দাবী করলে তার কাছে মহিষ দিয়ে দিয়েছি।

বিট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা অমিতাভ বসু এ সংবাদদাতাকে বলেন, ঘটনাটি এইমাত্র শুনেছি। তদন্ত দোষী প্রামনিত হলে মোঃ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এনসি/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২১)