নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর আত্রাইয়ে পাঙ্গাস মাছের পোনা উৎপাদনে ধস নেমেছে। এক সময় এ মাছের পোনা উৎপাদন করে অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ি লাখ লাখ টাকা আয় করলেও বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থার কারণে এ পোনা উৎপাদন মুখ থুবড়ে পড়েছে। এতে করে পোনা উৎপাদনকারীদের যথেষ্ট লোকসান গুনতে হচ্ছে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, আত্রাই উপজেলার মনিয়ারী, বিশা ও আহসানগঞ্জ ইউনিয়নের প্রায় অর্ধশতাধিক মৎস্যচাষী অধিক মুনাফার কারণে গত কয়েক বছর ধরে পাঙ্গাস মাছের পোনা উৎপাদনে ঝেঁপে পড়েন। দেশের গন্ডি পেরিয়ে পার্শবর্তী দেশ ভারতে ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি হয় এই পাঙ্গাস মাছের পোনার।

ফলে, ওই সময় থেকে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে নওগাঁর আত্রাইয়ে উৎপাদিত পাঙ্গাস মাছের এ পোনা ভারতে সরবরাহ করা হতো। এতে করে উৎপাদনকারীরা প্রতি চালানে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা লাভ করতে সক্ষম হতেন। উৎপাদন খরচ ছাড়াও লভ্যাংশে থাকত তাদের অনেক অর্থ। স্থানীয় একটি সূত্রে জানা যায়, বিগত সময়ে বছরে প্রায় ১৫০কোটি পোনা উৎপাদন করা হতো। যা থেকে আয় হতো ৭৫কোটি টাকা। বর্তমানে সীমান্তে ব্যাপক তল্লাশি ও এ পোনা পাচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় এ পোনা উৎপাদনে ধস নেমেছে বলে মৎস্য উৎপাদনকারীরা জানান।


পোণা উৎপাদনকারী ও বিশিষ্ট মৎস্য ব্যবসায়ি উপজেলার পতিসর গ্রামের মাসুম বলেন, ইতোপূর্বে এ পোণা উৎপাদন ও বিক্রি করে আমরা যে লাভবান হতাম, বর্তমানে এর চাহিদা কমে যাওয়ায় লভ্যাংশ তো নাই বরং অনেক ক্ষেত্রে লোকসান গুণতে হচ্ছে। এলাকার পোনা উৎপাদনকারী ও মৎস্য ব্যবসায়ি মোর্শেদ আলম বলেন, ভারতের চালান বন্ধ হওয়ায় পোনা ক্রেতাদের মাঝে আগ্রহ নেই। এ জন্য পোনার বাজারে ধস নামায় আমরা উৎপাদন খরচই ওঠাতে পারছিনা। উপরোন্ত পুকুর লীজের অর্থ, শ্রমিক মজুরীসহ অন্যান্য খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় পোনা উৎপাদনে আমরাও আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছি। উল্লেখ্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় পাঙ্গাস মাছের এ পোনা ভারতে রফতানির পথ উন্মুক্ত হলে একদিকে যেমন বৈদেশিক আয় বাড়বে, অন্যদিকে অনেক পোনা উৎপাদনকারীও স্বাবলম্বী হতে পারবে।

(বিএম/এএস/আগস্ট ২৫, ২০১৪)