আবুল কালাম আজাদ, রাজবাড়ী : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে সিগারেট ও তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে তামাক ও মাদকদ্রব্য থেকে মুক্ত করতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে দেশের মাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং প্রতিষ্ঠানের পাশে ধূমপান ও তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার, বিক্রি, প্রদর্শন ও বিজ্ঞাপন প্রচার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার পরিবেশ ও শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

দেশে এই আইন প্রচলিত থাকলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বা আশেপাশে ধূমপানসহ মাদকদ্রব্যের ব্যবহার বন্ধ হয়নি। এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেয়াল ঘেঁষে পান সিগারেটের দোকান গড়ে উঠেছে। এরি ধারাবাহিকতায় রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার মাছপাড়া ইউনিয়নের হলুদবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসার অভ্যন্তরে একটি ক্লাস রুম নিয়ে গড়ে উঠেছে মুদি ও কাঁচামাল জাতীয় পণ্যের দোকান। যেখানে মুদি ও সবজি জাতীয় পণ্যের পাশাপাশি বিক্রি হচ্ছে তামাকজাত দ্রব্য। আর দোকানটি গড়ে তুলেছে উক্ত মাদরাসার শিক্ষক নাসির (পিতা মালেক মল্লিক)। যিনি শিক্ষক হয়ে মাদরাসা সহ আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিচ্ছেন তামাকজাত দ্রব্য সিগারেট।

সাধারণ ভাবে যেকোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সুবিধার জন্য একটি লাইব্রেরি কিংবা হালকা খাবারের দোকানের বিধান রয়েছে। কিন্তু সবজি কিংবা মুদি দোকান দেওয়ার ও সেখানে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি সম্পূর্ণভাবে আইন বহির্ভূত।

প্রসঙ্গত, দেশে ধূমপান বা তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আইন রয়েছে। ২০১৩ সালে সংশোধিত ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইনে বলা হয়েছে পাবলিক প্লেসে ধূমপান করলে অনধিক ৩০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে। আর পাবলিক প্লেস বলতে আইনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি অফিস, আধা সরকারি অফিস, স্বায়ত্বশাসিত অফিস ও বেসরকারি অফিস, গ্রন্থাগার, লিফট, আচ্ছাদিত কর্মক্ষেত্র, হাসপাতাল ও ক্লিনিক ভবন, আদালত ভবন, বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দর, নৌ-বন্দর, রেলওয়ে স্টেশন, বাস টার্মিনাল, প্রেক্ষাগৃহ, প্রদর্শনী কেন্দ্র, থিয়েটার হল, বিপণি বিতান, চারদিকে দেয়াল দিয়ে আবদ্ধ রেস্টুরেন্ট, পাবলিক টয়লেট, শিশুপার্ক, মেলা বা পাবলিক পরিবহনে আরোহনের জন্য যাত্রীদের অপেক্ষার জন্য নির্দিষ্ট সারি, জনসাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা সময় সময় ঘোষিত অন্য যেকোনও বা সব স্থানকে বোঝানো হয়েছে।

এব্যাপারে হলুদবাড়িয়া মাদরাসা সুপার মজিবর রহমানের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি জানান, আমি মাদরাসায় একটি খাবারের ক্যান্টিন করতে বলেছিলাম। যদি সে এর বাইরে কিছু করে থাকে আমি সেটা আমলে নিয়ে দেখছি এবং বন্ধের ব্যবস্থা নিচ্ছি।

পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আলীকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি এর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নেবেন বলে জানান।

(একে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১)