গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ভাংনামারী ইউনিয়নের লক্ষীপুর দক্ষিণপাড়ায় যুবককে জবাইকে করে হত্যার রহস্য উৎঘাটন করেছে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে একই গ্রামের জয়নাল আবেদিনের পুত্র মোঃ বিপুল হাসান মিন্টু(২২) কে গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করেছে।

৪ নং আমলী আদালতের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট একেএম রওশন জাহান এর আদালতে ফৌজধারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে মিন্টু। মিন্টু’র বরাত দিয়ে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ইনচার্জ মো. শাহ কামাল আকন্দ জানান, মোঃ বিপুল হাসান মিন্টু ও নিহত হাসান মিয়া (১৯) বন্ধু। ঘটনার দিন শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় দু’জনেই একসঙ্গে গাঁজা সেবন করে। অতিরিক্ত গাঁজাসেবনের কারণে হাসান নেশাগ্রস্থ হয়ে মিন্টুকে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মিন্টু গাঁজা কাটার ছুরি দিয়ে জবাই করে হাসানকে হত্যা করে।

তিনি আরো জানান, গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাহপুর থানার ইদিলপুর গ্রামের রাজু আহম্মেদ ও হোসনে আরা দম্পত্তির পুত্র হলো হাসান মিয়া (১৯)। হোসনে আরা’র বোন মমতা বেগম তাকে ১৪দিন বয়সে পালক আনেন। ভাংনামারী ইউনিয়নের লক্ষীপুর দক্ষিনপাড়ার মো. মুন্নাছ আলীর স্ত্রী মমতা বেগম ছিলেন নিঃসন্তান।

এদিকে পালক মা মমতা বেগম জানান, তার ছেলে হাসান মিয়া কয়েল আনতে গিয়েছিলো। কয়েল নিয়ে এসে তারপর ইসলামী সভায় যাবে বলেও জানায়। তার জন্য তিনি টুপি-পাঞ্জাবীও প্রস্তুত করে রেখে ছিলেন। নিঃসন্তান মায়ের কোল ভরিয়ে দিয়েছিলো হাসান মিয়া। হাসানকে হারিয়ে তার মা মমতা বেগম আবারও নিঃস্ব। দু’হাত তুলে বারবার সন্তান হত্যার বিচার প্রার্থনা করছেন।

গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী জানান, হাসান মিয়া হত্যাকান্ড মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ডিবিতে হস্তাান্তর করা হয়েছে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ অফিসার ইনচার্জ মো. শাহ কামাল আকন্দের নেতৃত্বে বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে হাসান মিয়াকে ডিএমপি ঢাকা মিরপুর পল্লবী এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে ডিবি পুলিশ। তার দেয়া বর্ণনামতে হত্যাকান্ডের এলাকা থেকে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকুও উদ্ধার করেছে ডিবি। হত্যাকান্ডের ঘটনায় ১৯ ফেব্রুয়ারি গৌরীপুর থানায় হাসানের পালক মা মমতা বেগম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

(এস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১)