মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার : শীতের শেষ প্রান্থে করোনায় দীর্ঘদিন স্থবির হয়ে যাওয়া মৌলভীবাজার শহর উৎসবের মধ্যদিয়ে আবার জাগতে শুরু করেছে। বসন্তের শুরুতে গত শুক্রবার ২৬ ফেব্রুয়ারি মৌলভীবাজার শহরের পৌর জনমিলন কেন্দ্রে শুরু হয় তিনদিন ব্যাপী বসন্ত মেলা। রাজধানী ঢাকার ৫টি আর মৌলভীবাজারসহ বৃহত্বর সিলেট বিভাগের ১৯টিসহ সর্বমোট ২৪টি স্টল নানামূখী পণ্য নিয়ে অংশ নেন নতুন-পুরাতন উদ্যেক্তারা।  

রবিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) তিন দিনব্যাপী বসন্ত মেলার শেষ দিন থাকায় এদিন সকাল থেকে স্কুল-কলেজসহ নানা বয়সী তরুণীদের উপচেপড়া ভিড় ছিলো লক্ষণীয়।

মনিপুরী হস্তশিল্প, নজরকারা নানা ডিজাইনের বাটিকের থ্রী পিছ, নান্দনিক গহেনা, টপ, গাউন, নকশী শাড়ি, ট্রেডিশনাল শাড়ি, কুর্তি, জুয়েলারি এন্ড এক্সেসরিজ, অনলাইন বুটিকস, রেডি গার্মেন্টস প্রোডাক্টস, ওয়ান-পিস, টু-পিস, থ্রি-পিস এবং ফোর-পিস ড্রেস, কসমেটিক্স, বিউটি প্রোডাক্টস, লেডিস ব্যাগ, জুতা, হিজাব, বোরকা, অরিজিনাল ইউকে প্রোডাক্ট, ঘর সাজসজ্জা পণ্যসহ বিভিন্ন রকমারি পণ্য স্থান পেয়েছে মেলায়।

অংশগ্রহণকারী উদ্যেক্তা প্রতিষ্ঠান গুলোর বেশিরভাগই অনলাইনে চলে তাদের পণ্যের কেনাবেচা, রয়েছে সু-রুম। পাশাপাশি ব্যাপক পরিচিতি বাড়াতে মেলায় অংশ নিচ্ছেন উদ্যেক্তারা। মেলা শেষে নতুন উদ্যোক্তাদের দেয়া হবে সনদপত্র জানিয়েছেন আয়োজকরা। আয়োজকরা জানিয়েছেন মেলায় বিক্রিত পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে জুয়েলারী পণ্য।

ইভেন্ট ম্যানেজার শেখ শায়লা আক্তার লিশা বলেন,মেলায় আসা দর্শনার্থী ও উদ্যেক্তাসহ সবাই উৎসবের পূর্ণ আমেজে বিভিন্ন পণ্য ক্রয়-বিক্রয় করছেন। বলা যায় এই বসন্ত মেলা আমাদের দিয়েছে নতুন উদ্যেক্তা তৈরির ভিন্ন উৎসাহ-উদ্দীপনা।

এদিকে মেলা ঘুরে দেখার সময় দেখা হয় এ আয়োজনের নবীন উদ্যেক্তা মির্জা হামিদা বেগ আনিকার সাথে। জানতে চাইলে তিনি জানান, এপর্যন্ত পর্যটন শহর শ্রীমঙ্গলসহ মৌলভীবাজারে ৫টি মেলা করেছেন তারা। এসব মেলায় ব্যাপক লোক সমাগমের কারনে সবকটিই পেয়েছে সফলতা।

তিনি জানান,মেলা আয়োজনের উদ্দেশ্য হলো মৌলভীবাজার থেকে নতুন নতুন উদ্যেক্তা সৃষ্টি করা। মেলার মাধ্যমে উদ্যেক্তাদের একটা ফ্লাটফরম তৈরি করে দেয়া। এবারের মেলার মাধ্যমে আমরা ১২ থেকে ১৩ জন নতুন উদ্যেক্তা তৈরি করতে পেরেছি যারা তাদের পরিচিতি কিংবা ব্যবসার লাভের জন্য এসেছেন। প্রথম দিন হিসেবে আমাদের ধারনা ছিলনা যে এতটা লোক সমাগম হবে। এখন প্রতি মুহুর্তে মেলায় দর্শনার্থী কিংবা ক্রেতাদের সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিন ১০ থেকে ১২হাজার লোক সমাগম হচ্ছে। যাদের বেশির ভাগই নানা বয়সের তরুণী। তবে মাঝে মধ্যে তরুণরাও আসছেন মেলা দেখতে।

বসন্ত মেলাকে কেন্দ্র করে সবাই আনন্দে মেতে উঠছে, কেউ সেলফি কর্ণারে সেলফি তুলছে, কেউ হাতে মেহেদী রাঙাচ্ছে, কেউবা আবার নিজেদের নিয়ে আড্ডায় মেতে উঠছে এটাই মেলার মূল স্বার্থকতা ।

(একে/এসপি/ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১)