শরীয়তপুর প্রতিনিধি : অপহরনের দুই সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও এখনো উদ্ধার হয়নি শরীয়তপুর জেলা সদরের ষষ্ঠ শ্রেনীর শিক্ষার্থী সাথী আক্তারকে। থানায় মামলা করার পর পুলিশ বলছে অপহরনের সাথে জরিত আসামীদের গ্রেফতারসহ সাথীকে উদ্ধারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এদিকে মেয়েকে না পেয়ে পাগলপ্রায় সাথীর মা-বাবা।

শরীয়তপুর সদর উপজেলার সুজনদল গ্রামের সাথী আক্তার (১২) অপহৃত হয়েছে। এ ঘটনায় সাথীর বাবা নুর মোহাম্মদ মাদবর বাদী হয়ে পালং মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছে। অপহৃত সাথী এখনও নিখোঁজ রয়েছে।

অপহৃত সাথীর পরিবার ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর পৌর এলাকার আংগারিয়া বালিকা বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী সাথী আক্তার । তাকে একই গ্রামের মাহাবুল শিকদার (২০) বিভিন্ন সময় উত্যক্ত করাসহ নানা কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। কিন্তু ঐ সমস্ত প্রস্তাবে সাথী রাজি না হওয়ায় তাকে গত ৯ আগস্ট রাত ৮ টার সময় আলাউদ্দিন শিকদার এর ছেলে মাহাবুল শিকদার (২০), লিটন শিকদার (২৬), রাসেল শিকদার (২৩) ও জাকির শিকদার (১৮) অস্ত্রের মুখে সাথীর বাড়ি থেকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুজির পর সাথীকে না পেয়ে তার পরিবার দিশেহার হয়ে পড়ে। পরে প্রত্যক্ষদর্শীদের থেকে বিষয়টি সম্পর্কে সাথীর পরিবার জেনে স্থানীয় গণ্যমান্যদের মধ্যস্থ্যতায় আসামী পক্ষের কাছ মেয়ে উদ্ধারের চেষ্টা করে। সুজনদোল এলাকার কিছু প্রভাবশালী লোক সাথীকে তার মা বাবার কাছে ফিরিয়ে দেবার আশ্বাস দিয়ে তালবাহানা করতে থাকে। স্থানীয়দের মধ্যস্থায় সাথীকে ফেরত না পেয়ে ১২ আগষ্ট সাথীর বাবা নূর মোহাম্মদ মাদবর বাদী হয়ে চার জনকে আসামী করে শরীয়তপুর সদর থানায় একটি নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করনে। এখনও পর্যন্ত কোন আসামীকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ এমনকি উদ্ধার হয়নি সাথী।

অপহৃত সাথীর বাবা নূর মোহাম্মদ ও মা হাসিনা বেগম বলেন, ৫ম শ্রেনীতে পড়া অবস্থায়ই আমার মেয়েকে মাহবুল শিকদার উত্যক্ত করতো। সেজন্য বাড়ি থেকে ১০ কিমি দুরে আঙ্গারিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়ে মেয়েকে ভর্তি করেছি। তারপরে ক্ষিপ্ত হয়ে আলাউদ্দিন শিকদারের ছেলেরা আমার মেয়েকে তুলে নেবার হুমকি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে ৯ আগষ্ট রাতে সাথী আমার বাড়ির সামনের রাস্তায় পায়চারি করার সময় তারা অস্ত্রের মুখে অপহরন করে নিয়ে যায়। ১৬ দিন পার হয়ে গেলেও আমরা এখনো সাথীর কোন খোঁজ পাচ্ছিনা। পুলিশও কোন চেষ্টা করে বলে মনে হয়না।

আংগারিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, সাথী আকতার আমার বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেনীর ছাত্রী ছিল। গত ১০ আগস্ট থেকে সে বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত। শুনেছি মেয়েটি অপহৃত হয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শরীয়তপুর থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক উৎপল বিশ্বাস বলেন, অপহৃত মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছে। আসামীদের আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে খবর পেয়ে আসামীদের ধরা ও সাথীকে উদ্ধারের জন্য অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। তারা বার বার তাদের অবস্থান পরিবর্তন করছে।

(কেএনআই/এইচআর/আগস্ট ২৬, ২০১৪)