ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : একশ টাকায় কার্ড ঘষলেই মিলবে টিভি, ফ্রীজ, সেলাই মেশিনসহ নামী দামী ইলেকট্রনিক্স পণ্যসামগ্রী। এমন প্রলোভন দেখিয়ে একটি প্রতারকচক্র মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। অথচ কার্ড ঘষে এ সব কিছুই মিলছে না। মিলছে রাইস কুকার, বেলেন্ডার, গ্যাসের চুলাসহ নিন্মমানের সামগ্রী। সেগুলো আবার কিনতে হচ্ছে ১৫শ টাকা দরে। ঝিনাইদহের শৈলকূপায় শিক্ষক পাড়ার দুইটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে প্রতারক চক্র এমন ফাঁদ পেতেছে।

জানা গেছে, এই চক্র রাজবাড়ী, নড়াইলের লোহাগাড়া, মাগুরা সদরে এমন প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে রাতের আধারে পালিয়ে ঝিনাইদহের শৈলকূপার শিক্ষক পাড়ায় আস্তানা গড়ে তোলে। সেখানে বাটুল মুন্সী নামে এক ব্যাক্তির দোকানের ঠিকানা ব্যবহার করে বাসা ভাড়া নিয়ে শুরু করে। পল্লী অঞ্চলের দারিদ্র-শ্রমজীবি মানুষগুলো এমন লোভনীয় অফারে কার্ড কিনে প্রতারিত হচ্ছে। বিশেষ করে ইটভাটাগুলো টার্গেট করে এই চক্র মানুষকে ক্ষতিগ্রস্থ করে চলেছে।

২ নং আঠারোখাদা ইউনিয়ন পরিষদের পাশে কামারবাড়ি শাপলাবাটা ইটভাটা শ্রমিক মনজিলা, রেহেনাসহ অসংখ্য নারী ও পুরুষ শ্রমিক টিভি-ফ্রীজের চটকদারী গোলকধাঁধায় পড়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। একে জন শ্রমিক ১৫/২০ টা করে কার্ড কিনে সেসব কার্ডে মেলেনি তাদের টিভি বা ফ্রীজ। ঝিনাইদহের শৈলকূপার শিক্ষকপাড়ায় যখন চক্রটির সন্ধান পায় তখন মাগুরা থেকে ইটভাটার শ্রমিকগুলো আসে শৈলকূপা। তারা থানা পুলিশকে অবগত করে। পুলিশ জাতীয় পার্টির নেত্রী মনিকা আলম ও সাবেক ব্যাংকারের বাসায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সত্যতা পায়। পুলিশের খোঁজাখুজিতে ফাঁদপাতা চক্রটি পালিয়ে যায়।

তথ্য নিয়ে জানা গেছে, শৈলকূপার কিবিরপুর, ঝাউদিয়াসহ বেশ কিছু ইটভাটায় এই প্রতারক চক্র লাখ লাখ টাকার ব্যাবসা করেছে। এই প্রতারক চক্রের বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার মুকসেদপুর সহ বিভিন্ন উপজেলায়। এদিকে প্রতারক চক্রটির প্রধান রেশমা ইলেকট্রনিকস গ্যালারীর ম্যানেজার হিসাবে লোকমান হোসেন নামের এক যুবক নিজেকে পরিচয় দেয়, সে জানায় ঢাকায় তাদের শো রুম রয়েছে। এর আগে মাগুরায় ছিল তবে সেখানে পন্য বিক্রি না হওয়ায় ঝিনাইদহের শৈলকূপা চলে আসে বলে স্বীকার করে। এই চক্রের নারী কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে খুব সহজেই মানুষকে ফাঁদে ফেলছে।

শৈলকূপা থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম জানান, আমরা সেখানে অভিযান চালিয়েছি, কিন্তু তারা আগেই পালিয়ে গেছে।

(একে/এসপি/মার্চ ০৩, ২০২১)