কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি : গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা বেড়াতে আসা এক কিশোরীকে রাজ হাস তারা করলে সে পড়ে গিয়ে আহত হওয়ার ঘঠনাকে কেন্দ্র করে এক সাংবাদিকে বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ঢাকার লাল বাগ এলাকার জনৈক আব্দুর রাজ্জাক নামে এক ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার তরগাঁও ইউনিয়নের মৈশন মিয়াবাড়ীতে এই চাঞ্জল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে । মামলার পর গাজীপুর মাহামান্য আদালত থেকে সাংবাদিক সহ অনান্য আসামীরা জামিনে রয়েছে। ঘঠনাটি এলাকায় চাঞ্জ্যালের সৃস্টি হয়েছে।

সরেজমিনে পরির্দশন করে জানা যায়,উপজেলার মৈশন গ্রামের মহন মিয়ার বাড়ীতে বেড়াতে আসেন ফারদিন ও তার মা। পরের দিন ফারদিন একাই বাড়ী থেকে ঘুরতে বের হয়ে তখন পাশের বাড়ীর খোকনদের রাজহাঁসের তাড়া খেয়ে ভয়ে চিৎকার দিয়ে মাটিতে পড়ে গিয়ে ডান হাতে আঘাত পায় ফারদিন।পরে বাড়ীর লোকজন তাকে উদ্ধার করে বাড়ীতে নিয়ে আসে।

এ সময় বাড়ীর লোকজন তাকে কাপাসিয়া সদর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাড়ী থেকে বের হলে মোহন মিয়ার ছেলে শাহ আলম ও রোকন মিয়া আহত রুগিকে ৩ কিলোমিটার কাপাসিয়া সদর হাসপাতালে না নিয়ে প্রায় ১৯ কিলোমিটার দুরে শ্রীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। পরে ওই দিনই ফারদিনকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল হাসপাতালে সাধারণ রুগি হিসাবে ভর্তি করা হয়। এ ঘঠনার পর শাহ আলম ও রোকন মিয়া একই বাড়ীর বিজয় টিভির প্রতিনিধি সাংবাদিক মাসুদ পাভেজকে দায়ী করে এ ঘটনায় ২১ জানুয়ারি গাজীপুর আদালতে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা করা হয়। যার বাদী হন অপরিচিত ঢাকার লাল বাগের জনৈক আব্দুল রাজ্জাক নামে এক ব্যক্তি।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কাপাসিয়া থানায় অফিসার ইনচার্জকে মামলাটি রেকর্ডভুক্ত করার নির্দেশ প্রদান করেন। ওই দিন রাতেই কাপাসিয়া থানা পুলিশ মামলাটি নথিভুক্ত করেন। মামলার আসামী করা হয় বিজয় টিভির ও ঢাকা টাইমস পত্রিকার কাপাসিয়া প্রতিনিধি মাসুদ পারভেজ চৌধুরী, খোকনের সাবেক স্ত্রী রায়েদ ইউনিয়নের হাইলজোর গ্রামের সাথী, সাথীর ভাই তৌহিদুর রহমান রাজীব ও বাবা রফিকুল আলম মোল্লাকে। মামলা নম্বর ১১ (১) ২১। মামলার বিবরনে ভিকটিম মামলার বাদীর কি আত্মীয় তা উল্লেখ করেনি।

মামলার আরজিতে আরো বলা হয়েছে, ফারদিনকে মুমূর্ষু অবস্থায় মামলার বাদী শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে ঢাকার পঙ্গ হাসপাতালে রেফার্ড করলে গাজীপুর একটি বেসরকারি সিটি হাসপাতালে নিয়ে তার অপারেশন করা হয় বলে মামলাতে উল্লেখ করা হয়।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার রফিকুল ইসলাম চৌধুরী বাবলু, কাপাসিয়া ডিগ্রি কলেজের সাবেক ভিপি হাফিজুল হক চৌধুরী আইয়ুব, রাশিদা চৌধুরী, আজিজুর রহমান লিয়ন, সাফিয়া চৌধুরী, রহিমা চৌধুরী মিতু, নূরুল করিম টিটু, স্কুলছাত্র অপূর্ব ও নির্মাণ শ্রমিক মাহমুদুল হাসান সহ আরো অনেকেই জানান, ওই দিন মারামারির কোন ঘটনা ঘটেনি। ফারদিন রাজহাঁসের তারা খেয়ে পড়ে গিয়ে আঘাত পেয়েছেন।

এ ঘটনায় সাংবাদিক মাসুদ বলেন, ঘটনার দিন আমি উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির অনুষ্ঠানে ছিলাম। আমরা বাদীকেও চিনি না। আমার ক্ষতির উদ্দেশে পরিকল্পিতভাবে মামলা ও ফেসবুকে ও নোংরা প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, অপপ্রচারের কারণে গত ১৭ জানুয়ারি থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করেছি। ডাইরি নম্বর ৭৭০। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত খোকন বিদেশে থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই পলাশ বাউন এ প্রতিনিদিকে বলেন, আমি মেডিকেলের সার্টিফিকেট পাচ্ছি না। তদন্ত অব্যাহত আছে। সাংবাদিকসহ পুলিশ যৌথ তদন্তে সময় রাজহাঁসের তাড়া খেয়ে হাতে আঘাতের কথা বেরিয়েছে। তদন্ত শেষে খুব দ্রুত আদালতে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।

কাপাসিয়ায় বিজয় টিভি সাংবাদিক মাসুদ পারভেজ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও হয়রানিমূলক মামলা থেকে অব্যাহতি দাবি করে একাধিক সাংবাদিক সংগঠনসহ বিভিন্ন সংগঠনের কর্মকতারা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা সমাবেশ করেছেন।

(এসকেডি/এসপি/মার্চ ০৪, ২০২১)