আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন পার্লামেন্ট ভবন বা ইউএস ক্যাপিটলে আবারও অনুপ্রবেশ ও হামলা হতে পারে আশঙ্কায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ৪ মার্চ সেখানে একটি ‘বেনামি সশস্ত্র গোষ্ঠী’ হামলা চালাতে পারে বলে গোয়েন্দারা সতর্ক করার প্রেক্ষিতে এ ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন।

বিবিসি জানিয়েছে, সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কায় বৃহস্পতিবারের অধিবেশন বাতিল করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদ। তবে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ সিনেটে যথারীতি কার্যক্রম চলবে।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই ও ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেছে, অজ্ঞাত চরমপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী ৪ মার্চ অথবা ওই সময়ের দিকে ইউএস ক্যাপিটলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া এবং ডেমোক্র্যাট আইনপ্রণেতাদের সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে গত ফেব্রুয়ারি শেষদিকে আলোচনা করছিল। এতে অংশগ্রহণের জন্য হাজার হাজার মানুষকে ওয়াশিংটন ডিসি যেতে অনুপ্রাণিত করার উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা নিয়েও কথা বলছিল তারা।

গোয়েন্দাদের এ হুঁশিয়ারির প্রেক্ষিতে ক্যাপিটল পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ৪ মার্চ ক্যাপিটল ভবনে অজ্ঞাত সশস্ত্র গোষ্ঠীর সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ পরিকল্পনার কারণে নিরাাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

তারা বলেছে, কংগ্রেস, জনসাধারণ ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আমরা ইতোমধ্যে অবকাঠামো নির্মাণ এবং উল্লেখযোগ্যভাবে জনবল বৃদ্ধি করেছি। স্পর্শকাতর হওয়ায় এ বিষয়ে বেশি কিছু জানানো যাচ্ছে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে।

কিউঅ্যানন এবং ৪ মার্চ

উগ্র ডানপন্থী কিউঅ্যানন তত্ত্বের বিশ্বাসীরা মনে করেন, শয়তানের উপাসক ও শিশুনিপীড়ক একটি গোপন সংগঠন বিশ্বব্যাপী শিশুপাচার কার্যক্রম চালাচ্ছে এবং এরা ডোনাল্ড ট্রাম্পের শত্রু। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট এই গোপন সংগঠনের বিরুদ্ধে একাই লড়ে যাচ্ছেন। এই লড়াই চালিয়ে যেতে ট্রাম্পের ক্ষমতায় থাকা দরকার বলে বিশ্বাস করেন কিউঅ্যাননরা।

তাদের কাছে ৪ মার্চ তারিখটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ ১৯৩৩ সালে মার্কিন সংবিধানের ২০তম সংশোধনীর আগে প্রেসিডেন্ট এবং কংগ্রেস সদস্যরা এই দিনটিতেই অফিসের দায়িত্বভার গ্রহণ করতেন।

৪ মার্চ নিয়ে কিউঅ্যাননদের অনলাইনে আলোচনার বিষয়ে খবর রয়েছে মার্কিন নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কাছে। তবে তারাই ওই দিনে সহিংসতা করবে এমন সুনির্দিষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি বলে গত সপ্তাহে জানিয়েছিলেন এক এফবিআই কর্মকর্তা।

সাম্প্রতিক হুমকির প্রায় দুই মাস আগে ক্যাপিটল ভবনে হামলা চালিয়েছিল তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমর্থকেরা। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের জয়ের স্বীকৃতি দেওয়ার সংসদীয় প্রক্রিয়ার মধ্যেই সেখানে তাণ্ডব চালায় উগ্রবাদীরা। এতে এক পুলিশসহ নিহত হন অন্তত পাঁচজন।

এ ঘটনায় সারাবিশ্বে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয় এবং যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্রের ইতিহাসে কালিমা লেপনের দায়ী অভিযুক্ত হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। অবশ্য তিনি এখনও গত নভেম্বরের ওই নির্বাচনে হেরে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন না।

(ওএস/এসপি/মার্চ ০৪, ২০২১)