নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর মান্দায় মদ্যপ অবস্থায় স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিন ডলিকে (৫০) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার রাতে মারা যান তিনি। মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুর রহমান উপজেলার মৈনম ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের হাজী ময়েজ উদ্দিনের ছেলে।

নিহত ডলির বড়ছেলে ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ জানান, বাবা মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুর রহমান মদ্যপ অবস্থায় প্রায়ই মা ডলিকে নির্যাতন চালিয়ে আসছিল। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৭টার দিকে মদ খেয়ে বাড়ি ফিরে মাকে নির্যাতন শুরু করে। এসময় বাড়িতে ঢুকে বাবার নির্যাতনের হাত থেকে মাকে রক্ষা করি। এরপর বাবা সদর দরজা বন্ধ করে দিয়ে দ্বিতীয় দফায় মাকে মারপিট শুরু করলে নিরুপায় হয়ে বাড়ির অদুরে ডাকাতের মোড় থেকে ছোটভাই মুসা কালিমুল্লাহকে ডেকে নিয়ে আসি।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য অনিছুর রহমান ও গ্রামপুলিশ কলিম উদ্দিনকে অবহিত করে বাড়ি ফিরে দেখি মা রক্তাক্ত অবস্থায় অচেতন হয়ে পড়ে রয়েছে। ক্রিকেটব্যাট দিয়ে পিটিয়ে মাকে হত্যার চেষ্টা করেন বাবা জিল্লুর রহমান। এসময় আমার চিৎকারে প্রতিবেশিরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ছোটভাই মুসা মাকে উদ্ধার করে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার রাতে মারা যান তিনি।

ছেলে ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, মাকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় গত ৪ মার্চ মান্দা থানায় বাবা জিল্লুর রহমানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেছি। কিন্তু পুলিশ এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত বাবার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। বাবার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করায় তাকেও হত্যাসহ সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত ও বাড়িছাড়া করার হুমকি দেয়া হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান জানান, মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুর রহমান আমার নিকটতম প্রতিবেশি। তিনি সবসময় নেশাগ্রস্থ অবস্থায় থেকে এলাকার লোকজনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এসবের প্রতিবাদ করায় লোকজনকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। তার হুমকিতে এলাকার লোকজন ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পান না। স্ত্রীকে নির্যাতন তার নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার বলেও দাবি করেন ইউপি সদস্য আনিছুর রহমান।

তবে বাড়িতে উপস্থিত না থাকায় এসব বিষয়ে মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুর রহমানের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এব্যাপারে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ শাহিনুর রহমান জানান, নিহত নিলুফা ইয়াসমিনের ময়নাতদন্ত রামেক হাসপাতালে সম্পন্ন হয়েছে। এ বিষয়ে গত ৪ মার্চ নিহতের ছেলে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছে। নতুন করে এজাহার পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(বিএস/এসপি/মার্চ ০৮, ২০২১)