উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ ডেস্ক : সকালে ২নং সেক্টরে পাকবাহিনী নায়নপুরের পশ্চিম পাশে শশীদল গ্রামের নিকট সেনা সমাবেশ করে সেনেরবাজার মুক্তিবাহিনীর অবস্থানের ওপর মর্টারের সাহায্যে আক্রমণ চালায়। সমস্ত দিন যুদ্ধের পর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় মুক্তিযোদ্ধারা পাকসেনাদের আক্রমণকে প্রতিহত করে। এই সংঘর্ষে ১৫ জন পাকসেনা নিহত হয়।

মুক্তিবাহিনী পরশুরাম থানার কাছে পাকসেনাদের একটি টহলদার দলকে এ্যামবুশ করে। দুই ঘন্টা সংঘর্ষে পর পাকসেনারা মর্টারের সাহায্যে আক্রমণ চালিয়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এই সংঘর্ষে ৭ জন পাকসেনা নিহত হয়।

ঢাকায় মুক্তিবাহিনীর গেরিলা দল পাকসেনাদের ৪/৫টি বেডফোর্ড গাড়ী ও জীপকে গ্রীণ রোডে এ্যামবুশ করে। মাইনের আঘাতে পাকবাহিনীর একটি গাড়ী সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়। কয়েক ঘন্টা সংঘর্ষের পর মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকলে পাকসেনারা ক্যান্টনমেন্টের দিকে পালিয়ে যায়। এ সংঘর্ষে ২৪ জন পাকসেনা নিহত ও ৪১ জন আহত হয় এবং তিনটি গাড়ী বিধ্বস্ত হয়। মুক্তিবাহিনীর দু‘জন বীরযোদ্ধা আহত হন।

বাংলাদেশ সরকারের মুখপাত্র মিজানুর রহমান চৌধুরী মুজিবনগরে এক বিবৃতিতে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে জাতিসংঘ পর্যবেক্ষক মোতায়েন না করার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিব উ’ থান্টের প্রতি আহ্বান জানান।

প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার বিশেষ সহকারী ডাঃ এ.এম. মালিক ইসলামাবাদে বলেন, ইয়াহিয়া খান দেশে একটি বেসামরিক সরকার গঠনে আগ্রহী।

স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র প্রচারিত নিয়মিত বাংলা কথিকা ‘বিশ্বজনমত’ :

.............সম্প্রতি বৃটেন, কানাডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতবর্ষের পনেরজন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রাণরক্ষার জন্য অবিলম্বে সক্রিয় ও কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিশ্বের সকল সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
‘হংকং স্ট্যান্ডার্ড’ পত্রিকার এক সম্পাদকীয় নিবন্ধে বলা হয় : সামরিক আদালতে শেখ মুজিবুর রহমানের বিচারের নামে পাকিস্তানি সামরিক জান্তা যা করতে যাচ্ছে তা একটা প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। এই বিচার প্রহসনের পেছনে পাকিস্তানি সামরিক জান্তার যে গোপণ দুরভিসন্ধি রয়েছে তা বীভৎস।
আইরিশ আইনজীবী সমিতির অত্যন্ত প্রভাবশালী সদস্য ও রাজনৈতিক বন্দী মার্জনা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সংস্থার চেয়ারম্যান সিয়ান ম্যাকব্রাইড এক চিঠিতে জেনারেল ইয়াহিয়াকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিচার অসামরিক আদালতে করার জন্যে আবেদন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, কোন বিদেশী আইনজীবীকে পাকিস্তানের আদালতে শেখ মুজিবের পক্ষ সমর্থনের অনুমতি যদি না দেয়া হয় তাহলে শেখ মুজিবুর রহমান যাতে তাঁর ইচ্ছে মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবীদের সাথে পরামর্শ করতে পারেন তার ব্যবস্থা যেন করা হয়।
তিনি বলেন, বিচারে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে যদি তার ইচ্ছে মতো আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দেয়া তাহলে সে বিচার বলে গণ্য হতে পারে না।

তথ্যসূত্র : মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর।
(ওএস/অ/আগস্ট ২৭, ২০১৪)