আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : আবাসিক বোডিংয়ে থাকা মাদ্রাসা ছাত্র ইসমাইল হাওলাদার মিদুলকে (১৫) হত্যা করে লাশ গুমের অভিযোগে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় মাদ্রাসার সুপারসহ অন্যান্য শিক্ষকদের আসামি করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মাদ্রাসা ছাত্র মিদুল জেলার গৌরনদী উপজেলার দিয়াশুর গ্রামের মনিরুজ্জামান হাওলাদারের পুত্র। সে গৌরনদীর সীমান্তবর্তী মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার দক্ষিণ রমজানপুর গ্রামের জামেয়া ইসলামিয়া মাদ্রাসায় হেফজ শাখায় অধ্যয়নরত ছিলো।

রবিবার সকালে মিদুলের পিতা মনিরুজ্জামান হাওলাদার জানান, ২০২০ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে মিদুলের মা মাদ্রাসায় গিয়ে মিদুলের সাথে দেখা করেন। পরেরদিন সকালে মাদ্রাসার এক শিক্ষক মিদুলের নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি তাকে মোবাইল ফোনে জানায়। তিনি আরও জানান, মিদুল নিখোঁজ হওয়ার পর দিনই ওই মাদ্রাসার হেফজ শাখার শিক্ষক মাওলানা ফোরকান মাদ্রাসা থেকে চলে যায়। আবাসিক বোডিং থেকে মিদুলের রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ ও এক শিক্ষকের চলে যাওয়ার বিষয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কোন পদক্ষেপই গ্রহণ করেননি। ফলে মিদুলকে মাদ্রাসার শিক্ষকরাই গায়েব করেছেন বলে তিনি (মনিরুজ্জামান) ধারনা করছেন।

মিদুলের নিখোঁজের ব্যাপারে গত ২৬ সেপ্টেম্বর কালকিনি থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করা হয়। ওই জিডির সূত্রধরে মাদারীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোঃ ফয়সাল আল মামুন কালকিনি থানার ওসির কাছে জানতে চান মাদ্রাসা ছাত্র মিদুল নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে পুলিশ কি কি পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। কিন্তু পুলিশের কাছ থেকে আশানুরূপ রির্পোট না পেয়ে আদালতের বিচারক বিস্ময় প্রকাশ করেন।

মিদুলের বাবার অভিযোগ, তার পুত্র মিদুলের রহস্যজনক নিখোঁজের বিষয়ে তারা কালকিনি থানায় একাধিকবার মামলা দায়েরের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরবর্তীতে নিরুপায় হয়ে গত ৫ নভেম্বর তিনি (মনিরুজ্জামান) বাদী হয়ে মাদারীপুর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিদুলকে হত্যা করে লাশ গুম করার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় মাদ্রাসার সুপার মাওলানা জাকির হোসেন, সহকারী শিক্ষক মাওলানা ফোরকান, রুহুল আমিন ও মাওলানা বিল্লাল হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে গোপালগঞ্জের পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেছেন।

(টিবি/এসপি/মার্চ ২১, ২০২১)