স্টাফ রিপোর্টার : লভ্যাংশ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করায় মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) লেনদেনের শুরুতেই দেশের শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রায় সবকটি অ-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা লিজিং কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়ে যায়। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে সার্বিক শেয়ারবাজারে।

এদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এবং আরেক শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেনের শুরুতে মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়েছে।

এর আগে গতকাল সোমবার আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর লভ্যাংশের সীমা বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশসহ মোট ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারবে। অনতিবিলম্বে এই নির্দেশনা কার্যকর হবে এবং পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত এটি বলবৎ থাকবে।

তার আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর লভ্যাংশ বণ্টন সংক্রান্ত একটি নীতিমালা প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

ওই নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়, প্রভিশন সংরক্ষণ করতে গিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিশেষ অনুমতি (বাকিতে সংরক্ষণ) নেয়া আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগকারীদের নগদে কোনো লভ্যাংশ দিতে পারবে না।

কিন্তু বিশেষ বিবেচনায় সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিতে পারবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতির প্রয়োজন হবে। আবার যাদের খেলাপি ঋণের হার ১০ শতাংশের বেশি তারা পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারবে না।

এছাড়া যাদের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের পরিমাণ ১০ শতাংশের চেয়ে কম কিন্তু খেলাপি ঋণের হার ১০ শতাংশের বেশি-তারাও এ তালিকায় থাকবে। এর বাইরে অর্থাৎ সন্তোষজনক অবস্থায় থাকা প্রতিষ্ঠানগুলো সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিতে পারবে।

এ নির্দেশনা জারির পর সার্বিক শেয়ারবাজারে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার ও চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার শেয়ারবাজারে রীতিমতো ধস নামে।

এ পরিস্থিতিতে সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর লভ্যাংশ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তের পরিবর্তন এনে প্রজ্ঞাপন জারি করায় মঙ্গলবার লেনদেনের শুরুতেই শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তালিকাভুক্ত ২৩টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র দুটির শেয়ার দাম কমেছে। বিপরীতে দাম বেড়েছে ১৭টির। আর ৪টির শেয়ার দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

অধিকাংশ আর্থিক শেয়ার দাম বাড়ার ইতিবাচক প্রভাব অন্যান্য খাতেও পড়েছে। এতে বেলা ১০টা ৫২ মিনিট পর্যন্ত ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৬২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৪টির। আর ৯২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৪০ কোটি ৩৬ টাকা।

অপরদিকে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৩৩ পয়েন্টে বেড়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ ৬ পয়েন্ট বেড়েছে। আর ডিএসই-৩০ সূচক বেড়েছে ১৬ পয়েন্ট।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮৬ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ৯১ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ৪৫টির, কমেছে ১৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৭টির।

(ওএস/এসপি/মার্চ ২৩, ২০২১)