ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : ঈশ্বরদীতে বুধবার দু’গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় বুধবার ১টি এবং বৃহস্পতিবার বিকেলে ২টি  মামলা দায়ের হয়েছে। অস্ত্র আইনে পুলিশ বাদী হয়ে বুধবার রাতে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতারকৃত পৌর ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন অবুজ এবং যুবলীগ কর্মী আকমলকে বৃহস্পতিবার সকালে পাবনা জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।

বৃহস্পতিবার উভয়গ্রুপের দায়েরকৃত মামলায় উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রাকিবুল হাসান রনি এবং ফতেহমোহাম্মদপুর এলাকার সেলিম থানায় আটক রয়েছে। শুক্রবার এদের জেলা হাজতে পাঠানো হবে বলে ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন। তিনি আরো জানান, বুধবারের সংঘর্ষের ঘটনায় রনির বাবা রজব আলী বাদী হয়ে আমজাদ হোসেন অবুজ এবং আকমলসহ ১৬ জনকে নামীয় এবং আরো ১০/১২ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে বৃহস্পতিবার থানায় মামলা দায়ের করেছেন। অপরপক্ষে আহত ছাত্রলীগ কর্মী মেহেদী হাসান শুভ বাদী হয়ে পৌর যুবলীগের সভাপতি আলাউদ্দিন বিপ্লব, ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রনিসহ ২২ জনকে নামীয় এবং আরো ৭ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছে।

বুধবার ঈশ্বরদীতে দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষে তিনজন আহত হয়। এসময় দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িতে হামলা, গুলিবর্ষণ এবং ভাংচুর ঘটনা ঘটে । এসব ঘটনায় আহতদের মধ্যে ছাত্রলীগ কর্মী রাতুল (২৬) কে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও মেহেদী সান শুভ (২৬) কে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আহত উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রনি (২৯) পুলিশ হেফাজতে এনে রাখা হয়। পুলিশ এসময় একটি রিভালবার উদ্ধার করে।

ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ গেটের সামনে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাকিবুল হাসান রনির ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অফিসে তালা দেয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে । কিছুক্ষণ পর দুপুর ১টার পর ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে আবারো দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে পৌর যুবলীগ সভাপতি আলাউদ্দিন বিপ্লবের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, সাবেক যুবলীগ নেতা কালাম মোল্লা বাড়ি ও ছাত্রলীগ সভাপতি রনির ব্যক্তিগত কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটে।

ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) অরবিন্দ সরকার ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা নিশ্চিত করে জানান, ঈশ্বরদী সরকারি কলেজের সামনের একটি দোকানে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রনির ব্যক্তিগত অফিস ছিল। এই দোকানের মালিকানা স্বত্ব নিয়ে মালিক পক্ষের দুটি গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন দ্বনন্দ্ব চলছিল । রনি এই দ্বন্দ্ব নিরসনের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা নিরসন হয়নি। এই অবস্থায় ছাত্রলীগ কর্মী শুভ ছাত্রলীগের আরেকটি গ্রুপের সহযোগিতায় বুধবার সকালে রনির অফিসে তালা দিলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

সংঘর্ষ চলাচলে বুধবার দুপুরে রাকিবুল হাসান রনি জানায়, আমার অফিসে প্রথমে তালা, পরে ভাংচুর এবং হামলা চালিয়ে আমাকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।

অপরদিকে পৌর ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন অবুজ বলেন, ছাত্রলীগ সভাপতি রনির ছুরিকাঘাতে রাতুল ও শুভ আহত হয়। রনি পরিকল্পিতভাবে রাতুল ও শুভ’র উপরে হামলা চালিয়েছে।

পৌর যুবলীগের সভাপতি আলাউদ্দিন বিপ্লব অভিযোগ করেন, তার বাড়ির সামনের দোকান, অফিস ও গাড়ি ভাংচুর এবং যুবলীগ নেতা কালামের বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। একই সময়ে ছাত্রলীগ সভাপতি রনির ব্যক্তিগত অফিস ভাংচুর করা হয়।

পরিস্থিতি শান্ত রাখতে পাবনা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ আনা হয়েছে। ঈশ্বরদী শহরের মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

(এসকেকে/এসপি/মার্চ ২৫, ২০২১)