ছাদেকুল ইসলাম রুবেল, গাইবান্ধা : গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে ঝড়ের তান্ডব চলাকালে ইটভাটার গরম বাতাস নির্গত হওয়ায় প্রায় ২’শ বিঘা জমির বোরো ধান বিনষ্ট হতে বসেছে।

সংশ্লিষ্ট কৃষি অফিস সূত্র জানায়, গতকাল রবিবার (৪ এপ্রিল) দুপুর আড়াইটার দিকে পলাশবাড়ীর উপর দিয়ে আকস্মিক কাল বৈশাখীর মৌসুমী ঝড় আঘাত হানে। উপজেলায় যত্রতত্র অবস্থিত ইটভাটা গুলোর তাপমাত্রা নির্গত হওয়ায় কমবেশি উপজেলার সর্বত্র বোরো ধানের দানা ঝলসে গিয়ে কৃষককূল মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীনে পড়েছেন। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা বিষয়টি টের পেয়ে সোমবার সকালে তাৎক্ষনিক এলাকায় সমেবেত হন। এসময় ক্ষতির বিষয়টি কৃষকরা মৌখিক ভাবে উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করেন।

উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নাধীন পলাশবাড়ী-গাইবান্ধা সড়ক ঘেঁষে সাখোয়া ব্রিজ সংলগ্ন জনৈক বাদশা মিয়ার মালিকানাধীন ২টি ইটভাটা থেকে অসহনীয় গরম তাপমাত্রা নির্গত হওয়ায় ওই এলাকা জুড়ে প্রায় ২’শ বিঘা জমির বোরো ধান ঝলসে অপূরনীয় ক্ষতির সম্মুখীন বলে জানা যায়। ক্ষতিগ্রস্থ ধান চাষীদের অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান নয়ন, কৃষি অফিসার মো. আজিজুল ইসলাম ও দায়িত্বপ্রাপ্ত থানা অফিসার ইনচার্জ (পুলিশ পরিদর্শক) মো. মতিউর রহমান সরেজমিন ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেন।

পরিদর্শনকালে এসময় কর্মকর্তাবৃন্দ প্রাথমিকভাবে মৌখিক অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় এব্যাপারে কৃষকদের লিখিত অভিযোগ দাখিল করতে বলা হয়। এদিকে একই ইউপির গড়েয়া ব্রিজ এলাকায় পৃথক দু’টি ইটভাটার অনুরুপ নির্গত গরম বাতাসের ঝাপটায় ওই এলাকার বিপুল পরিমাণ জমির ধানগাছ ঝলসে গেছে বলে কৃষকরা তাদের অভিযোগে জানায়।

এছাড়া উপজেলার অন্যান্য এলাকায় ইটভাটা সমূহের অনুরুপ নির্গত গরম বাতাসের ঝাপটায় ক্ষতির সংশয় থাকায় সর্বস্তরের ভূক্তভোগি বোরো চাষীরা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। কৃষি অফিসার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জানান এমনিতেই স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলে ধানগাছ ঝলসে গিয়ে চিটায় পরিণত হয়। এক্ষেত্রে ৪০% ডিগ্রী তাপমাত্রা বিরাজমান থাকলে ধানগাছ চিটায় পরিণত হয়। এক্ষেত্রে ইটভাটার তেজস্বী ১০০% ডিগ্রী তাপমাত্রার তেজস্ক্রিয়ার কূ-প্রভাব বিরাজমান থাকায় ধানগাছ অবধারিত চিটায় পরিণত হবার সম্ভাবনা থেকেই যায়।

এব্যাপারে মাঠ পর্যায় প্রান্তিক কৃষকদের সার্বিক স্বার্থ সংরক্ষণে পরবর্তিতে আবারো সরেজমিন পরিদর্শন করে ইটভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুজ্জামান নয়ন।

অপরদিকে, এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রোববার দুপুরে উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া আকস্মিক ধূলিঝড়ে উপজেলায় ১’শ ৭০ জমিতে কলাচাষ করা হয়েছে। তন্মধ্যে ১৫ হেক্টর জমির ৭৫% কলাগাছের ক্ষতিসাধন হয়েছে। এদিকে ভুট্টা চাষ করা হয় ১ হাজার ২’শ ৫০ হেক্টর জমিতে। তন্মধ্যে ১০ হেক্টর জমির ১০% জমির ভুট্টা ক্ষতিসাধন হয়েছে বলে কৃষি বিভাগ জানায়।

(এস/এসপি/এপ্রিল ০৫, ২০২১)