আবুল কালাম আজাদ, রাজবাড়ী : যারা টমেটোর আগাম আবাদ করেছেন তারা প্রতি মণ টমেটো বিক্রি করেছেন ২ হাজার টাকার ওপরে। কিন্তু চাষিদের অনেকেই পরে টমেটো লাগিয়েছেন। তারা এখন পাচ্ছেন না দাম। প্রতি মণ টমেটোর দাম মাত্র ১০০ টাকা। 

জমিতে গাছে গাছে ঝুলছে পাকা টমেটো। টমেটোর ভারে নুয়ে পড়েছে গাছ। কিন্তু টমেটো তুলছেন না ক্ষেতের মালিক। ক্ষেতে নষ্ট হচ্ছে বিপুল পরিমাণ টমেটো।

এই চিত্র রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার বাঘারচর গ্রামের। স্থানীয় কয়েকজন টমেটো চাষিরা বলছেন, দরপতনের কারণে তারা টমেটো তুলতে আগ্রহ হারিয়েছেন। এক মণ টমেটো বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া যাচ্ছে, তার চেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে বাজারজাতকরণে। এতে লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের।

টমেটো প্রক্রিয়াকরণের ব্যবস্থা বা সংরক্ষণাগার থাকলে এই ক্ষতি এড়ানো যেত বলে মনে করেন কৃষি খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

প্রতি বছর রাজবাড়ীর রাজবাড়ী সদর, গোয়ালন্দ, বালিয়াকান্দি, কালুখালি ও পাংশার অর্থাৎ পাঁচটি উপজেলার মোট আবাদি জমির ০.৮ শতাংশ জমিতে টমেটো আবাদ হয়। রোগবালাইয়ের আক্রমণ কম এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবারও হয়েছে টমেটোর বাম্পার ফলন।

যারা আগাম আবাদ করেছেন তারা প্রতি মণ টমেটো বিক্রি করেছেন ২ হাজার টাকার ওপরে। কিন্তু চাষিদের অনেকেই পরে টমেটো লাগিয়েছেন। তারা এখন দাম পাচ্ছেন না। প্রতি মণ টমেটোর দাম মাত্র ১০০ টাকা।

জেলার পাংশা উপজেলার কৃষক মিলন বিশ্বাস, জাহাঙ্গীর ও সুফিয়া বেগম বলেন, প্রথম দিকে কিছুটা দাম পেলেও মাঝখানে এসে টমেটোর দাম পড়ে গেছে। কৃষকরা এখন আর ক্ষেত থেকে টমেটো তুলছেন না। ক্ষেত থেকে টমেটো তুলতে যে টাকা খরচ হয়, টমেটো বিক্রি করতে হচ্ছে তার অর্ধেক দামে। ফলে ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে টমেটো।

রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষিবিদ এসএম শহীদ আকবর বলেন, এ অঞ্চলে যদি টমেটো প্রক্রিয়াকরণের কোনো ব্যবস্থা থাকত বা সংরক্ষণের জন্য হিমাগার থাকত, তাহলে এসব টমেটো নষ্ট হতো না। ভবিষ্যতে এ ধরনের ফসল চাষে আরও আগ্রহী হতেন চাষিরা।

(একে/এসপি/এপ্রিল ০৬, ২০২১)