আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে নিরাপত্তা ও শৃংখলা বজায় রক্ষার কাজে নিয়োজিত আনসার ও ভিডিপি’র সদস্যদের জন্য বরাদ্দকৃত সম্মানির টাকা নিয়ে নানা তালবাহানা শুরু করেছেন সংশ্লিষ্ট কতিপয় কর্মকর্তারা। উল্টো ডিউটিতে নাম লেখানোর শুরুতেই জনপ্রতি ৫ থেকে ৭’শ টাকা করে ঘুষ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি বরিশালের বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, পাথরঘাটা উপজেলায় গত ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৫১টি ভোট কেন্দ্রে একজন প্লাটুন কমান্ডার (পিসি), একজন সহকারি প্লাটুন কমান্ডার (এপিসি), ছয়জন আনসার ও চারজন নারী আনসার বা ভিডিপি কর্মীসহ মোট ৬১২ জন সদস্য ও সদস্যা তাদের দায়িত্ব পালন করেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা নির্বাচনের নিরাপত্তা ও শৃংখলার দায়িত্ব পালন করা সত্বেও অদ্যবধি তারা নির্বাচন কমিশন থেকে বরাদ্দকৃত সম্মানির টাকা হাতে পাননি। এজন্য তারা প্রতিদিন সংশ্লিষ্ট অফিসে ধর্ণা দিয়েও নানা হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, একদিনের নির্বাচন হলেও মূলত পাঁচ কর্মদিবসের হিসেবে দৈনিক ভাতায় পিসি ও এপিসি’র জন্য ৩৫০ টাকা, সদস্যদের জন্য জনপ্রতি ৩২০টাকা হিসেবে বরাদ্দ করা হয়েছে। এরসাথে যাতায়াত বাবদ ১’শ টাকা ও একদিনের শুকনো খাবার বাবদ ২৫০ টাকাসহ মোট পিসি ও এপিসিদের জন্য ২১’শ টাকা এবং সদস্যদের জন্য ১৯৫০ টাকা বরাদ্দ দেয় নির্বাচন কমিশন। সে মতে পাথরঘাটা উপজেলার ৬১২ জন সদস্যদের জন্য ১২ লাখ ৮ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। আনসার সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করা পৌর এলাকার ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ইলিয়াছ খান, কাকচিড়া ইউনিয়নের সোলায়মান হোসেনসহ অনেকেই অভিযোগ করেন, অফিসের খরচের কথা বলে নির্বাচনের আগেই ইউনিয়ন কমান্ডারেরা প্রত্যেক আনসার ও ভিডিপি’র সদস্য-সদস্যাদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৫ থেকে ৭’শ টাকা করে প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করে হাতিয়ে নিয়েছেন।
পাথরঘাটা আনসার ও ভিডিপি মহিলা প্রশিক্ষক সেতারা বেগম বলেন, নির্বাচনে আনসার ও ভিডিপির সদস্যদের ৫ দিনের কর্মকান্ড দেখানো হয়েছে। এসব কর্মকান্ডে প্রতিদিন সদস্যরা গ্রাম থেকে আসতে অনেক টাকা খরচ হতো। সে কারনে তাদের খরচ কমানোর জন্য দলনেতারা সদস্যদের বাড়ি গিয়ে কাগজপত্রের কাজ গুছিয়ে দিয়েছেন। আর এজন্যই প্রত্যেকের কাছ থেকে গাড়ি ভাড়া বাবদ কিছু টাকা নেয়া হয়েছে।
ইউনিয়ন কমান্ডার মো. সাবিবর হোসেন উৎকোচ আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নির্বাচনের আগে বেশ কয়েকজন আমাকে টাকা দিয়েছিলো। আমি মনে করেছিলাম নির্বাচনের দিন খাবারের ব্যবস্থা করতে ওই টাকা দেয়া হয়েছে। পাথরঘাটা উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসেন বলেন, অগ্রীম টাকা তোলার বিষয়ে মৌখিক ভাবে শুনেছি। এ ব্যাপারে কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে জেলা কমান্ডেন্ট মো. খলিলুর রহমান জানান, নির্বাচনী ডিউটির সম্মানির বরাদ্দ এখনো হাতে পাওয়া যায়নি। বরাদ্ধ পেলেই তা বিতরণ করা হবে।

(টিবি/এএস/এপ্রিল ২১, ২০১৪)