সমরেন্দ্র বিশ্বশর্মা, কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) : কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোঃ মেসবাহুল ইসলাম বলেছেন, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের কান্না, ঝড়ো হাওয়া ও তাপ প্রবাহে বিবর্ণ হয়ে যাওয়া বোরো ধানের ক্ষেত দেখে খুব কষ্ট লেগেছে। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ ফসলের মাঠে এসে কৃষকের ক্ষয় ক্ষতি ও বেদনার বিষয়টুকু বুঝতে পেড়েছি। সিনিয়র সচিব আরো বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা তৈরি করে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা দেবে। 

আগামী আউশ ও আমন মৌসুমে কৃষি প্রনোদনা সহ অতি দরিদ্র কৃষকদের বিকল্প উপায়ে কি সহযোগিতা করা যায় তা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্যই আমরা মাঠে এসেছি। তিনি ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের প্রকৃত তালিকা তৈরির জন্য কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের পরামর্শ দেন। ঝড়ো হাওয়া ও তাপ প্রবাহে (গরম বাতাসে) পুড়ে গিয়ে বিবর্ণ হওয়ে যাওয়া ধান ক্ষেত ও কৃষকদের দুঃখ দূর্দশার বিষয় নিজ চোখে দেখতে বুধবার বেলা ২ টায় নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় ছুটে আসেন সিনিয়র সচিব মোঃ মেসবাহুল ইসলাম।

তিনি কান্দিউড়া ইউনিয়নের ব্রাহ্মনজাত বোরো ফসলের মাঠে যান এবং ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মুখ থেকে তাদের কষ্টের কথা শুনেন।

এসময় কৃষি অধিদপ্তরের মহা পরিচালক, কৃষিবিদ মোঃ আসাদুল্লাহ বলেন, ঝড়ো হাওয়া ও তাপ প্রবাহে (গরম বাতাসে) ধান ক্ষেত বিবর্ণ হওয়ার ঘটনা এটি তিনি প্রথম দেখেছি। তিনি ক্ষতিগ্রস্থ ধান ক্ষেতে পানির সেচ এবং কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে স্প্রে মেশিন দিয়ে ঔষধ ছিটিয়ে দেয়ার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেন।

বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউটের মহা পরিচালক ড. মোঃ শাহজাহান কবীর বলেন, গরম বাতাসে জমি আক্রান্ত হতে আর দেখিনি। তিনিও জমিতে পানির সেচ ও স্প্রে মেশিন দিয়ে ঔষধ দেয়ার পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের বলেন, মন খারাপ করবেন না। প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলায় সরকার আপনাদের পাশে আছে এবং থাকবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম শাহজাহান কবির জানান, কেন্দুয়া উপজেলায় ২০ হাজার ৭শ ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঝড়ো হাওয়া ও গরম বাতাস প্রাথমিক তথ্যে ৩ হাজার ২০ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।

তিনি বলেন, এ রিপোর্ট মন্ত্রনালয়ে পাঠালেও জনপ্রতিনিধিরা আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে দাবী করছেন। আমরা নিখুঁত ভাবেই তথ্য সংগ্রহ করছি।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর ময়মনসিংহ অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক, আব্দুল মাজেদ, নেত্রকোনা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুহেল মাহমুদ, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর নেত্রকোনার উপ-পরিচালক মোঃ হাবিবুর রহমান, কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মইন উদ্দিন খন্দকার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ খবিরুল আহসান, কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ নূরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট আব্দুল কাদির ভূঞা ও মোজাফরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জাহাঙ্গীর চৌধুরী ও দলীয় নেতৃবৃন্দ।

পরে কৃষি সচিব নেত্রকোনার মদন, খালিয়াজুড়ি ও মোহনগঞ্জ উপজেলার হাওর অঞ্চলে ক্ষতিগ্রস্থ ফসলের মাঠ দেখতে চলে যান। উল্লেখ্য গত রোববার সন্ধ্যা রাতে ঝড়ো হাওয়া ও তাপ প্রবাহে কেন্দুয়ায় বোরো ফসলের মাঠ ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়।

(এসবি/এসপি/এপ্রিল ০৭, ২০২১)