উজ্জ্বল হোসাইর, চাঁদপুর : চাঁদপুরে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ উপলক্ষে নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে বিকল্প আয়বর্ধনমূলক কর্মসূচির অংশ হিসেবে উপকরণ বিতরণের জন্য আনা হয়েছিলো ২০টি রিকশা-ভ্যান। চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে সারিবদ্ধ সেই রিকশাভ্যান শোভা পাচ্ছিলো। ৭ এপ্রিল বুধবার জেলা মৎস্য বিভাগের উদ্যোগে সদর উপজেলার জেলেদের মাঝে সেই রিকশাভ্যান বিতরণের আয়োজন করা হয় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে। কিন্তু বিতরণকালে জানা গেলো, যারা রিকশাভ্যান পাচ্ছে তাদের অনেকেই প্রকৃত জেলে নয়। বিষয়টি জেলা প্রশাসক জানতে পেরে তাৎক্ষণিক বিতরণ কার্যক্রম স্থগিত করে তদন্তের নির্দেশ দেন।

বুধবার সকাল ১১টায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনা অনুসন্ধানে ডিসি অঞ্জনা খান মজলিশের নির্দেশে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

এ সময় চাঁদপুরের পৌর মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান জুয়েল, চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আসাদুল বাকী, চাঁদপুর সদর উপজেলার ইউএনও সানজিদা শাহনাজসহ মৎস্যজীবী সমিতির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেনখোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যেসব ব্যক্তিকে জেলে হিসেবে আনা হয়েছে রিকশাভ্যান দেয়ার জন্য, তারা কেউ মৎস্য আড়তের কর্মচারী, কেউ সমিতির কর্মচারী বা কেউ ইউপি চেয়ারম্যানের নিকটজন। এভাবে বিগত দিনেও সঠিক তদন্ত না থাকার কারণে প্রকৃত জেলেরা বাদ পড়ে আসছে সরকারি এ যাবতীয় সুবিধা থেকে। জেলে তালিকা তৈরির সময় দায়িত্বশীলতার অভাবে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন স্থানীয় এক শ্রেণির জনপ্রতিনিধি। ভোটের জন্যে অপেশাদার লোকদেরকে জেলে তালিকায় তারা স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির মাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত করেন।

এদিকে অপেশাদার জেলেদের মাঝে ভ্যান বিতরণ করায় উপস্থিত সবাই অবাক হন। জেলা মৎস্য বিভাগের এমন কাণ্ডে দায়িত্বশীলতার অভাব রয়েছে বুঝতে পেরে জেলা প্রশাসক রিকশাভ্যান বিতরণ বন্ধ এবং যেগুলো বিতরণ হয়েছে সেগুলো ফেরত আনার জন্যে তাৎক্ষণিক নির্দেশ প্রদান করেন।

এদিকে কী কারণে অপেশাদার লোকদের হাতে জেলেদের উপকরণ বিতরণ করা হয়েছে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য ৩সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছেন ডিসি। ওই তদন্ত কমিটিতে চাঁদপুর সদর ইউএনও সানজিদা শাহনাজকে আহ্বায়ক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান মাহমুদ ডালিমকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।

এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আসাদুল বাকি উপস্থিত সাংবাদিকদেরকে বলেন, নিবন্ধিত জেলেদের এই তালিকাটি আগের। যার কারণে অপেশাদার লোক থাকতে পারে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, তদন্তে যাচাই-বাছাই না হওয়া পর্যন্ত রিকশাভ্যান বিতরণ স্থগিত থাকবে। প্রকৃত জেলেদেরকেই এ রিকশাভ্যান দেয়া হবে।

(ইউ/এসপি/এপ্রিল ০৭, ২০২১)