উজ্জ্বল হোসাইন, চাঁদপুর : বিএসটিআইসহ কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই চাঁদপুরে বেশ কয়েকটি সেমাই কারখানায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নিম্নমানের সেমাই তৈরি করে আসছে। এসব অসাধু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের অভিযোগ স্থানীয়দের। প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক ব্যবস্থা নিলেও কোনোভাবেই তাদেরকে নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। চিকিৎসকরা বলছেন, এ ধরনের খাদ্য গ্রহণে নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুর শহরের ঐতিহ্যবাহী ব্যবসায়ী কেন্দ্র পুরাণবাজার ও সদর এলাকার কয়েকটি স্থানে বেকারী ব্যবসায়ীরা ঈদ উপলক্ষে সেমাই উৎপাদন করেন। কিন্তু তাদের এসব সেমাই উৎপাদনে বিএসটিআইসহ খাদ্যের গুণগত মান যাচাই ছাড়াই এখন প্রতিযোগিতামূলকভাবে সেমাই তৈরি করে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ব্যস্ত সময় পার করছে। কারখানাগুলোতে উৎপাদন কাজে ব্যবহৃত ময়দা, চিনি, ডালটা, ভোজ্যতেল, এরারূট ও লবণ ইত্যাদি খুবই নিম্নমানের। বিক্রির জন্যে প্রস্তুত করা সেমাইগুলোর অধিকাংশ নোংড়া ও পোকা মাকড় পড়ে থাকে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহরের পুরাণবাজার রয়েজ রোড এলাকার পাঁচতারা, আলম বেকারী, নিতাইগঞ্জ রোডে রূপালী সেমাই, ভূঁইয়ার ঘাটে প্রাইমসহ কয়েকটি বেকারী এবং বেশ ক’টি সেমাই কারখানার শ্রমিকরা কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি না মেনে দিন ও রাতে কাজ করে যাচ্ছেন। শ্রমিকদের হাতে গ্লাবস, মুখে মাস্ক ও পায়ে প্লাস্টিক গামবুট থাকার কথা থাকলেও কোনো কিছুই নেই। অধিকাংশ কারখানায় শ্রমিকরা জড়ো হয়ে সেমাই উৎপাদন করছে। আর এসব উৎপাদিত সেমাই চাঁদপুর জেলাসহ আশপাশের জেলাগুলোর বাজারে বাজারজাত করা হচ্ছে। নোংরা পরিবেশের বিষয়ে কারখানার মালিক ও শ্রমিক কথা বলতে নারাজ।

বাস্তবে সেমাই কারখানাগুলোতে অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশ থাকলেও তা স্বীকার করছে না মালিক পক্ষ। পুরাণবাজারের কারখানার শ্রমিক সেলিম, মাসুদ ও বিল্লাল বলেন, তারা সারাদিন কাজ করার পর কারখানাগুলো পরিস্কার করেন। লকডাউনের কারণে আগের চাইতে এখন সেমাইর চাহিদা কমে আসছে।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডাঃ সুজাউদ্দৌলা রুবেল বলেন, এসব কারখানায় পোড়া তেলসহ নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়। যেগুলো খেলে গ্যাস্টিক, আলসার, আমাশয়, পাতলা পায়খানাসহ ক্যান্সারও হতে পারে। তাই এই ধরনের খাদ্য বর্জন করাই উত্তম।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেমাই তৈরী হচ্ছে এমন তথ্য আমার কাছে নেই। তবে অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(ইউ/এসপি/এপ্রিল ২৭, ২০২১)