নীলফামারী প্রতিনিধি : হেরোইন সেবন করতে না দেয়ায় মাদক সম্রাট মিজানুর রহমানকে (৪৮) শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে দুই মাদক সেবী। ২১ এপ্রিল বিকেলের দিকে ডোমার শহরের কাজীপাড়াস্থ নিজ বাড়িতে মিজানুরকে হত্যা করে একই এলাকার গোডাউন পাড়ার মৃত হাকিম উদ্দিনের ছেলে আবু তালেব (৫৫) ও কাজীপাড়ার রশিদুল ইসলামের ছেলে আব্দুস সালাম (৪০)।

এদিন রাত আটটার দিকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরদিন ময়না তদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

পুলিশ জানায়, মিজানুরের স্ত্রী সাহিদা বেগম রুপা সন্তান মেঘলা মনিকে নিয়ে ঘটনার দিন রংপুরে যান চিকিৎসকের কাছে।

এরই মধ্যে দুপুরে মিজানুর ফোনে ছালামকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ছালামকে এক ব্যক্তির কাছে দশ পিচ ইয়াবা দিয়ে আসতে বলেন। সরবরাহকারী স্থানে আগে থেকেই ছিলো অপর মাদক সেবী আবু তালেব। পরে তারা দু’জনের মিজানুরের বাড়িতে ফিরে তার কাছে হেরোইন খেতে চাইলে দিতে অস্বীকার করে মিজানুর। কথা কাটাকাটি ও ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে স্ট্যান্ড ফ্যানের তার দিয়ে পেঁচিয়ে হত্যা করে মিজানুরকে ।এরপর চেয়ারে রেখে পালিয়ে যান তালেব ও ছালাম।

পালিয়ে যাওয়ার সময় তালেবের চশমা সেখানে পড়ে থাকে। এটিই জব্দ করে ঘটনার রাতেই পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

ডোমার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোস্তাফিজার রহমান জানান, চশমা সুত্রে প্রথমে গ্রেফতার হন আবু তালেব। পরে তার তথ্য মোতাবেক এবং মিজানুরের মোবাইলের কললিস্ট চেক করে পরবর্তিতে ২৫ এপ্রিল গ্রেফতার করা হয় অপর মাদক সেবী আব্দুস সালামকে। ছালাম পুলিশের কাছে ঘটনার বর্ণনা এবং হত্যায় নিজের সম্পৃক্ততা উল্লেখ করে আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

ডোমার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জয়ব্রত পাল জানান, ঘটনার পরই কাজ শুরু করে পুলিশ। বিভিন্ন বিষয়ের উপর শুরু হয় তদন্ত। এক পর্যায়ে চশমার মালিক গ্রেফতার হওয়ায় তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেফতার হয় আব্দুস সালাম। এরই মধ্যে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে বের হয় সালাম ও তালেবের উপস্থিতি এবং হত্যার বর্বরতা।

জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল বাশার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান জানান, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা দু’জনই জেলা কারাগারে রয়েছেন। তারা আদালতে স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সবোর্চ্চ সাজা হবে আদালত থেকে আমরা এটি মনে করি।

পুলিশ জানায়, চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানের নামে ১৬টি এবং তার স্ত্রী সাহিদা বেগম রুপার নামে ২০টি মাদক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় জামিনে রয়েছেন তারা।

(কে/এসপি/এপ্রিল ২৭, ২০২১)