কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : সরকারী নির্দেশ অমান্য করে কলাপাড়া হাসপাতালের রুমে বসে এখনও রোগী দেখছেন কাঠালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা.মো.জুনাইদ হোসেন লেলীন (রেজি নং ৩৫৮৯১)। ২৭ আগষ্ট সে কাঠালিয়া হাসপাতালে যোগদান করলেও কোন ছুটি না নিয়ে কলাপাড়া হাসপাতালে বসে প্রাকটিস করছেন। জরুরী বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের হাসপাতালে ভর্তিও দিচ্ছেন।

জানাযায়, কলাপাড়া হাসপাতালে সাবেক আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো.জুনাইদ হোসেন লেলীন কে কলাপাড়া হাসপাতাল থেকে বদলী করে কাঠালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জুনিয়র কনসালটেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। কিন্তু সে এ বদলী ঠেকাতে অনেক তদবির করে ব্যর্থ হয়ে গত ২৭ আগষ্ট ঝালকাঠি সিভিল সার্জন অফিসে যোগদান করেন।

কিন্তু সেখান থেকে ওই হাসপাতালে না গিয়ে কোন ছুটি না নিয়ে কলাপাড়া হাসপাতালের তার আগের রুমে বসে আবাসিক মেডিকেল অফিসার হিসেবে রোগী দেখতে শুরু করেন। অনুসন্ধানে দেখা যায় গত ২৯ আগষ্ট জনৈক সেকান্দার হাওলাদার( রেজিষ্টার সিরিয়াল নং ৭০২১/১৮),২৮ আগষ্ট আবুল কালাম (রেজিষ্টার সিরিয়াল নং-৬৯৯৫/১৪),কুলসুম (রেজিষ্টার সিরিয়াল নং-৬৯৯৬/১৫),আবুল (রেজিষ্টার সিরিয়াল নং-৬৯৯৫/১৪), ময়না বিবি (রেজিষ্টার সিরিয়াল নং-৭০১২/১০)সহ একাধিক রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন। এছাড়া আউটডোরে অন্তত তিন শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা দিয়েছেন। কলাপাড়া হাসপাতাল প্রশাসনকে ভুল বুঝিয়ে অন্য হাসপাতালের ডাক্তার হয়েও কলাপাড়া হাসপাতালে বসে দিব্যি রোগী দেখছেন। এ ঘটনা হাসপাতালের সবার অবগত থাকলেও সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না।

অভিযোগ রয়েছে সে কলাপাড়া হাসপাতালে যোগদানের পর থেকে এখানে টাকা ছাড়া কোন রোগীর চিকিৎসা হয়নি। আগে রোগীরা খুশি হয়ে একশ টাকা দিলেও সে দুইশ টাকা ভিজিট দেওয়ার রেওয়াজ চালু করে। এমনকি বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর স্যাম্পল সে নিজ চেম্বারে বসে বিক্রি করতো রোগীদের কাছে। এ নিয়ে তার চেম্বারে বসে রোগীর স্বজনদের সাথে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে।

এ ব্যাপারে ডা.মো.জুনাইদ হোসেন লেলীন জানান, তিনি মৌখিক ছুটি নিয়ে কলাপাড়ায় এসেছেন। আর হাসপাতালে রোগী ভর্তি দেওয়া এবং চেম্বারে বসে প্রাকটিস করার কথা জানতে চাইলে কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি।

এ ব্যাপারে কাঠালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য প্রশাসক ডা. জাফর আলী খান জানান, ডা. লেলীন তার কাছ থেকে ছুটি নেননি। এমনকি তাকে জানিয়েও যায়নি। তাছাড়া এক হাসপাতালের ডাক্তার হয়ে অন্য হাসপাতালে রোগী ভর্তি দিতে কিংবা প্রাকটিস করতে পারে না।

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য প্রশাসক ডা.আবদুর রহিম জানান, সে কাঠালিয়া হাসপাতালে যোগদান করেনি বলে তাকে জানিয়েছে। এ জন্য তার রুমে বসে সে প্রাকটিস করেছে। এ ঘটনা জানার পর শুক্রবার রাতে তার রুম তালাবদ্ধ করে দেয়া হয়েছে।

(এমকেআর/আগস্ট ৩০, ২০১৪)