নিউজ ডেস্ক : হলিউডের বিখ্যাত মুভি ‘উইজার্ড অব ওজ’মুভি কি কেউ দেখেছেন? যারা দেখেছেন তারা বলতে পারবেন, নায়িকা ডরোথির ছিল এক জোড়া যাদুর জুতা। সেই লাল জুতাই তাকে দ্রুত তার বাড়িতে পৌঁছে দিত।

সম্প্রতি ভারতের এক প্রযুক্তি কোম্পানি কোম্পানি বাস্তবে এ রকম একটি নতুন জুতা প্রস্তুত করেছে। আশ্চর্য হলেও সত্যি এই স্মার্ট স্পোর্টস শো তার মালিককে তার গন্তব্য বাতলে দেবে। আর এই কারণে জুতার নাম দেয়া হয়েছে ‘লে চল’বা নিয়ে চল। অচিরেই এটি বাজারে আসার কথা রয়েছে।

অভিনব এই জুতার আইডিয়া এসেছে দুই প্রকৌশলীর মাথা থেকে। এরা হলেন ক্রিস্পিয়ান লরেন্স(৩০) এবং অনিরুদ্ধ শর্মা(২৮)। ২০১১ সালে একটি ছোট্ট বাড়িতে এর নির্মাণ কাজ শুরু করেন তারা। এখন সেখানে ৫০ জন শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

লাল রং এর এই কেডস গন্তব্য পৌঁছানোর সময়ও বাতলে দেবে। ফলে ভ্রমণে কতটা সময় ও ক্যালরি ব্যয় হবে সে বিষয়ে অতি সহজেই ধারণা পাওয়া যাবে। এছাড়া এ জুতার মাধ্যমে মানসিক বৈকল্যে আক্রান্ত শিশুদের গতিবিধি সহজেই নজরে রাখতে পারবেন তাদের বা-মায়েরা।

আসছে সেপ্টেম্বর মাসেই বাজারে আসছে লে চল। এই জুতার সঙ্গে সংযুক্ত রেয়েছে ব্লুটুথ ডাটাকেবল। গুগল ম্যাপের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনকারী এই ক্যাবল জুতার মালিককে হাঁটার সময় ডানে না বামে মোড় নিতে হবে তা জানিয়ে দেবে।

লরেন্স এই জুতা সম্পর্কে সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন,‘আমাদের তৈরি এ জুতা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বা ক্ষীণ দৃষ্টির লোকদের বেশ কাজে আসবে এবং অন্যের সাহায্য ছাড়াই তারা চলাফেরা করতে পারবে।’

লাল রংয়ের নতুন এই জুতা ইতিমধ্যেই সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। ২৫ হাজার অগ্রিম অর্ডার পেয়েছেন লরেন্সরা। খুচরা বাজারে প্রতি জোড়া জুতা একশ থেকে দেড়শ মার্কিন ডলারে বিক্রি করা হবে।

হায়দ্রাবাদের এলভি প্রাসাদ আই ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞরা এই জুতার গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করে দেখছেন।

প্রতিষ্ঠানের পরিচালক বিপিন দাস এ সম্পর্কে বলেছেন,‘এটি একটি উপকারী আইটেম। দৃষ্টি প্রতিদ্বন্ধীরা তাদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি বেল্ট বা হেলমেট পড়তে ভুলে যায়। কিন্তু জুতা ছাড়া তো তারা বাড়ি থেকে বেরই হতে পারবে না। এটি সাদা ছড়ির লাঠির মতই তাদের বেশ সহায়তা করবে।’

উপরোক্ত উপকারিতার পাশাপাশি এ জুতার একটা সমস্যাও আছে। ভ্রমণ করার সময় রাস্তায় এর ব্যাটারি ডাউন হলে বা ব্লুটুথ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে অন্ধদের বেশ সমস্যায় পড়তে হবে। তবে সেটার জন্য এমন অপসন রাখা হয়েছে যার মাধ্যমে আত্মীয় বা বন্ধুরা তাদের অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং তাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসতে পারবেন।

(ওএস/এটিআর/আগস্ট ৩১, ২০১৪)