কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : গত তিনদিনেও পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটার সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ সচল হয়নি। এ কারণে পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে কুয়াকাটা সৈকত। সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় কুয়াকাটায় আটকে পড়া শতাধিক পর্যটক শনিবার রাতে নৌ-পথে কলাপাড়া শহরে এসে কুয়াকাটা ছেড়েছেন।

গত শুক্রবার রাতে রড বোঝাই একটি ট্রাক কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়কের নির্মানাধীন শেখ কামাল ব্রিজ সংলগ্ন ফেরিতে উঠতে গিয়ে ফেরির স্লিপার ভেঙ্গে আটকে যায়। এতে অতিরিক্ত ওজনের কারনে ফেরির পল্টুন ফুঁটো হয়ে ডুবে যায়। সড়ক ও জনপথ বিভাগের বরিশাল ও পটুয়াখালীর কর্মকর্তারা শনিবার ভেঙ্গে পড়া ফেরির স্লিপারটি উদ্ধার করে মেরামত করলেও এখনও উদ্ধার করতে পারেনি ডুবে যাওয়া ফেরিটি।


তিনদিন ধরে কুয়াকাটার সাথে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় চরম বিপাকে পড়েছেন আলীপুর-মহিপুর ও কুয়াকাটার মৎস্য ব্যবসায়ীরা। সাগরে গত কয়েকদিন ধরে কিছু ইলিশ ধরা পড়লেও সরাসরি মোকামে পাঠাতে না পারায় প্রতিমন ইলিশে অতিরিক্ত দুই/তিনশ টাকা বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে। অনেক ব্যবসায়ী এ সুযোগে জেলেদের কাছ থেকে কম মূল্যে কিনছে।


পটুয়াখালী সড়ক ও জনপথ বিভাগের কলাপাড়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো.বেল্লাল হোসেন জানান, গলাচিপা থেকে একটি বলগেট ও কলাপাড়ার হাজীপুর ফেরিঘাটের একটি ফেরিও আনা হয়েছে। আগামীকালের মধ্যে তারা ডুবে যাওয়া ফেরিটি উত্তোলন করতে পারবেন বলে আশা করছেন।


সরেজমিনে দেখা যায়, আন্ধারমানিক নদীর প্রচন্ড স্রোতের কারণে ডুবে যাওয়া ফেরিটি উত্তোলন করতে বেশ সমস্যায় পড়ছে উদ্ধারকর্মীরা। নদীর প্রায় ৩০/৩৫ নিচে ফেরিটি তলিয়ে রয়েছে। তাছাড়া প্রতিটি জোয়ার ভাটায় পলি পড়ার কারণে উদ্ধারকারীরা ফেরিটি তুলতে পারছেন না।


স্থানীয়রা জানান, বর্তমানে যেভাবে উদ্ধার কাজ চলছে তাতে একমাসেও এই ফেরিটি তোলা সম্ভব হবে না। এখনই বিকল্প পথে ফেরি চলাচলের ব্যবস্থা চালু করা উচত। কেননা প্রতিদিনই ফেরিটি কাদার নিচে দেবে যাচ্ছে।


কুয়াকাটা সড়ক ও জনপথ উপ-বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো.সিদ্দিকুর রহমান জানান, যত দ্রুত এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সচল করে দেওয়া যায় আমরা এই চেষ্টা করছি। দুই/একদিনের মধ্যে সড়কটি চালু করতে পারবো।


এদিকে কুয়াকাটার সাথে তিনদিনেও সড়ক যোগাযোগ চালু না হওয়ায় এখন ট্রলারে করে মাছ রফতানি করতে হচ্ছে। একাধিক ব্যবসায়ী জানান, আড়তে মাছ থাকলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে তাই আলীপুর ও মহিপুরের ব্যবসায়ীরা ট্রলারে করে মাছ কলাপাড়া এনে এখান থেকে বিভিন্ন স্থানে মাছ পাঠাতে হচ্ছে। এতে পরিবহন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তাছাড়া সঠিত সময়ে মাছ পাঠাতে না পারায় অনেক ব্যবসায়ীরা মাছ নষ্ট হয়ে গেছে।


মহিপুর বন্দর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব দিদার উদ্দিন আহমেদ মাসুম বলেন, সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় এখন ইলিশ রফতানি করা যাচ্ছে না। বিকল্প পথে তাদের মাছ পাঠাতে হচ্ছে। এতে পরিবহন খরচ বেড়ে গেছে।

(এমকেআর/এএস/আগস্ট ৩১, ২০১৪)