কলাপাড়া সংবাদদাতা : পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার তরমুজ উৎপাদন হলেও মহাজনদের দাদনের যাতাকলে পড়ে নিস্পেষিত হচ্ছে শতাধিক তরমুজ চাষী। ফলে এর চাষাবাদ দিন দিন কমে যাচ্ছে। কৃষকরা চাষাবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ২ হাজার ৫২০ জন কৃষক ১হাজার ৪৪৬ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষাবাদ করেছে। এতে হেক্টর প্রতি ৩২ থেকে ৩৫ মেট্রিক টন তরমুজের উৎপাদন হয়েছে। ২০১৩ সালে ওই উপজেলায় ৩ হাজার ৫৯৫ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষাবাদ হয়েছিল, এ সময় চাষীর সংখ্যাও ছিল অনেক বেশী। এসব তরমুজ চাষীরা ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে মোটা অংকের টাকা দাদন এনে চাষাবাদ করেছে ।

অপরদিকে, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে বাকীতে সার ওষুধ কিনে ফসল ওঠার পর তিনগুন দামে তা পরিশোধ করতে হচ্ছে। ফলে ওই টাকা পরিশোধ করতে না পারায় এ বছর চাষাবাদের পরিমান অর্ধেকে নেমে এসেছে। এ ছাড়াও রয়েছে ট্রান্সপোর্ট এবং পুলিশের চাদাঁসহ দফায় দফায় বিভিন্ন চাদাঁ । ফলে অতিরিক্ত ট্রাক ভাড়া দিয়ে অনেক চাষী তরমুজ ঢাকায় পাঠিয়েও লাভের মুখ দেখছে না। অন্যদিকে, মহাজনরা ইচ্ছামত রেট দেয়ায় বছরের পর বছর লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষকদের। ফলে এক সময় যেসব চাষীরা ধান ফলানোর চেয়ে তরমুজ ফলাতে আগ্রহী ছিল, তারাও এখন খালী ফেলে রেখেছে ফসলের মাঠ। তবে যেসব চাষীরা এবছর তরমুজ উৎপাদন করেছেন, তাদের বেশীর ভাগ অন্য জায়গায় তরমুজ সরবরাহ না করে সরাসরি ক্ষেতে কিংবা স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেছেন । এতে কিছুটা হলেও লাভের মুখ দেখছেন তারা।

এ ব্যাপারে উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের লোন্দা গ্রামের কৃষক জব্বার হাওলাদার জানান, মহাজনদের কাছ থেকে দাদন এনে চাষাবাদ করায় অনেকে এখন দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে। খরচ অনুযায়ী বিক্রি না আসায় তারা একেবারে চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।

চম্পাপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য কামাল মৃধা জানান, পাটুয়া গ্রামের কৃষক জলিল খাঁ মহাজনদের চাপে ঘর ছেড়ে পালিয়েছে।

(এমপি/এইচআর/এপ্রিল ২২, ২০১৪)