আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি : একটি ভিডিও’র কারনে সরকারী ত্রানের ঘর বঞ্চিত আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের ৭৫ বছর বয়সি বৃদ্ধা কমলা বেগম পেল মাথা গোজার ঠাঁই পাকা ঘর। বিধবা কমলা বেগমের জরাজীর্ণ ঘুপরী ঘরে বসবাস নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুবলীগ নেতা সোহেল রানা’র একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ওই ভিডিও নজরে আসে আমতলী উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম ছরোয়ার ফোরকান এবং তার ছোট ভাই পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি আওয়ামীলীগ নেতা শফিকুৃল ইসলাম চাঁন মিয়ার। পরে তারা মুজিব বর্ষ উপলক্ষে তাদের অর্থায়নে বৃদ্ধা কমলা বেগমকে একটি পাঁকা ঘর তৈরি করে দেন। 

জানা গেছে, ২০১৫ সালে আমতলী উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাখালী গ্রামের বাসিন্দা আফেজ প্যাদা মারা যান। তার মৃত্যুতে শারীরিক প্রতিবন্ধি ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে নিরুপায় হয়ে পড়েন বিধবা কমলা বেগম। সহায় সম্ভলহীন কমলা বেগম অর্ধাহারে অনাহারে দুই সন্তান নিয়ে দিনাতিপাত করেন। গত পাঁচ বছর পূর্বে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ছেলে ও মেয়ের বিয়ে দেন। ছেলে স্ত্রী নিয়ে ঢাকায় দিনমজুরের কাজ করেন। কিন্তু মায়ের খোঁজ খবর নেয়ার সক্ষমতা তার নেই। মা কমলা বেগম বাড়ীতে মানুষের সহযোগিতায় অর্ধাহারে-অনাহারে দিনাতিপাত করছেন। বসবাস করেন একটি জরাজীর্ণ খড়ের (নাড়া) ঘুপরী ঘরে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন বিধবা কমলা বেগমের জরাজীর্ণ ঘরে বসবাসের একটি ভিডিও আঠারোাগছিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ প্রচার সম্পাদক মোঃ সোহেল রানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করেন। ওই ভিডিও আমতলী উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম ছরোয়ার ফোরকান ও তার ভাই পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য মোঃ শফিকুল ইসলাম চাঁন মিয়ার নজরে আসে।

পরে তারা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাদ্দকৃত ঘর পাওয়া হইতে বঞ্চিতদের জন্য পাকা ঘর দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ইতিমধ্যে মুজিব বর্ষ উপলক্ষে উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম ছরোয়ার ফোরকান ও তার ছোট ভাই শফিকুল ইসলাম চাঁন মিয়া তাদের অর্থায়নে আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের ১৮ হতদরিদ্রদের পরিবারের মাঝে পাকা ঘর দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় সরকারী ঘর বঞ্চিত বিধবা কমলা বেগম ও মিজানুর রহমানের ঘরের কাজ চলছে। উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ গোলাম ছরোয়ার ফোরকান এবং তার ছোট ভাই আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম রিপন ঘরের কাজের উদ্বোধন করেছেন।

বৃদ্ধা কমলা বেগম কান্নাজনিত কন্ঠে বলেন, হারা জীবন মুই নাড়ার ঘরে থাইক্কা আইছি। এ্যাহন মোরে চেয়ারম্যান ইডের ঘর দেছে। মোর কপালে এই সুখ সইবে।

আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন যুবলীগ প্রচার সম্পাদক মোঃ সোহেল রানা বলেন,টাকা না দেয়ায় সরকারী ঘর পাওয়ার উপযুক্ত হতদরিদ্র পরিবারকে ঘর দেয়নি ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ। পরে আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকৃত হতদরিদ্রদের বাস্তব অবস্থা ভিডিও করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করি। ওই ভিডিও দেখে উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম ছরোয়ার ফোরকান ও তার ছোট ভাই শফিকুল ইসলাম চাঁন মিয়া তাদের অর্থায়নে ইউনিয়নের ১৮ হতদরিদ্র পরিবারকে ঘর দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারই দুইটি ঘরের কাজ চলছে।

পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য মোঃ শফিকুল ইসলাম চান বলেন, পরিবারের অর্থায়নে উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় মুজিব বর্ষ উপলক্ষে ঘর দেয়া হবে। আপাদত আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নে সরকারী ঘর বঞ্চিত হতদরিদ্র দুই পরিবারের মাঝে ঘর দেয়া হয়েছে। আরো ১৬ পরিবারকে ঘর দেয়া হবে।

আমতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব গোলাম ছরোয়ার ফোরকান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া সরকারী ঘর বঞ্চিত হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ঘর নির্মাণ করে দেয়া হবে। দুইটি ঘরের কাছ চলছে। অবশিষ্ট কাজ অল্প দিনের মধ্যেই শুরু করবো।

(এটি/এসপি/মে ২৩, ২০২১)